হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন ড. কামরুল ইসলাম বলেছেন, জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম প্রবর্তনের মাধ্যমে দেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) উদ্যোগে আয়োজিত বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।
ড. কামরুল ইসলাম জানান, তাঁর দায়িত্বকালে জবাবদিহির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর ফলে স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৮৫ শতাংশের বেশি ব্যাগেজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বিশেষ হটলাইন ব্যবস্থা চালু করেছি, যার মাধ্যমে যাত্রীদের অভিযোগের প্রায় ৯০ শতাংশ সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। এতে সেবা প্রদানের মানও বেড়েছে।’
ড. ইসলাম আরও বলেন, সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ জেট জ্বালানির মূল্যহ্রাস বিমানভাড়ার নিম্নমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করবে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জিডিপিতে বিমান খাতের অবদান ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫-৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
ড. কামরুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন, বহু প্রতীক্ষিত তৃতীয় টার্মিনাল এ বছর চালু হবে। এটি এইচএসআইএর পরিচালন সক্ষমতা বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
ড. ইসলাম দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার প্রশংসা করে বলেন, ‘বিমান খাতের ওপর গঠনমূলক প্রতিবেদন তৈরির জন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই; বিশেষ করে এইচএসআইএর কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) হিসেবে ভূমিকা তুলে ধরার জন্য।’
নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ দায়িত্ব গ্রহণের সময় বলেন, ‘বিমানবন্দর একটি দেশের প্রথম ছাপ। এতে সর্বোচ্চ মানের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।’ তিনি আন্তর্জাতিক মানের যাত্রী ও কার্গো সেবা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে এইচএসআইএ যাত্রীপ্রবাহ প্রায় ৭ শতাংশ বাড়ে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ যাত্রী (দেশীয় ও আন্তর্জাতিক) পরিচালনা করা হয়, যা ২০২৩ সালের ১ কোটি ১৭ লাখ থেকে বেড়েছে। শুধু আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচলই ৮ শতাংশ বেড়েছে।