হোম > সারা দেশ > শরীয়তপুর

পুলিশ এনে মারধরের অভিযোগ, ধাওয়া খেয়ে ইতালিপ্রবাসীর মৃত্যু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পুলিশ এনে এক ইতালিপ্রবাসীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এরপর ওই প্রবাসী ভয়ে পালানোর সময়  বাড়ির পাশের একটি বিলে পড়ে অচেতন হয়ে যান। এরপর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ইতালিপ্রবাসী চাঁন মিয়া হাওলাদার উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের ফজলুল হক হাওলাদারের ছেলে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের তদন্তের জন্য পুলিশ তাঁদের বাড়িতে আসে। এ সময় পুলিশের সামনেই অভিযোগকারীরা চাঁন মিয়াকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে ভয়ে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় পার্শ্ববর্তী বিলে পড়ে যান। এরপর তাঁরা চাঁন মিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানায়, চাঁন মিয়া ২০১২ সালে স্পনসর ভিসায় ইতালিতে পাড়ি জমায়। ২ মাস আগে ছুটি কাটাতে দেশে আসেন তিনি। পূর্ব শত্রুতার জেরে গত শুক্রবার নড়িয়া বাজারে চাঁন মিয়ার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে হামলা চালায় তুহিন, রুবেল ও তাঁদের অনুসারীরা। পরবর্তীতে গতকাল সোমবার ঘড়িশার গরুর মাঠ এলাকায় পুনরায় চাঁন মিয়াকে মারপিট করেন তুহিন ও রুবেল। 

এ ঘটনায় উল্টো তুহিন পেদার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তুহিন ও রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তে যান নড়িয়া থানার উপপরিদর্শক ইকবাল হোসেন। এ সময় চাঁন মিয়া বাড়িতেই ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ এ সময় চাঁন মিয়াকে কিল-ঘুষি মারে পুলিশ ও সাথে থাকা সদস্যরা। এরপর ভয়ে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন চাঁন মিয়া। এ সময় পুলিশ ও অভিযোগকারীরা তাঁকে ধাওয়া করেন। এর আধা ঘণ্টা পরে পার্শ্ববর্তী একটি বিলের মধ্যে চাঁন মিয়াকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। এ সময় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

চাঁন মিয়ার মৃত্যুর খবরে বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে নানান রকম স্লোগান দেয় স্থানীয়রা। সুনির্দিষ্ট ওয়ারেন্ট না থাকার পরও চাঁন মিয়াকে জোর করে আটকের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

নিহতের বোন রোকসানা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশ এসে আমার ভাইয়ের বুকে ঘুষি মারতে থাকে। তখন ভাই দৌড় দিলে পুলিশ ধাওয়া করে। এতে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। আমরা ভাইয়ের খুনিদের বিচার চাই।’

নিহত চাঁন মিয়া হাওলাদারের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার পোলারে ২ বার মারছে তুহিন ও রুবেল। ওরাই আবার উল্টা আমার পোলার বিরুদ্ধে থানায় নালিশ করছে। পুলিশের সঙ্গে তুহিন ও রুবেলরে দেইখা পোলায় আমার ডরে দৌড় দেয়। পুলিশের লগে তুহিন, রুবেলও আমার পোলার পিছে ধাওয়া করে। কিছুক্ষণ পরে পোলায় বিলের মধ্যে পইরা থাকার খবর হুনতে পাই। হাসপাতালে নিয়া গেলে ডাক্তার কয় আমার পোলা আর নাই। আমি অগো বিচার চাই।’ 

চাঁন মিয়ার স্ত্রী পায়েল বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ওরা আমার স্বামীরে মারধর করছে। তার সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা তাঁর চিকিৎসা করাইয়া সুস্থ করছি। পুলিশের সঙ্গে তুহিন ও রুবেলরে দেখে সে ভয় পেয়ে পালাতে চেষ্টা করে। পরে শুনতে পাই সে মারা গেছে।’ 

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকর কর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তুহিন ও রুবেল চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চাঁন মিয়ার বাড়িতে তদন্তে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে কি হয়েছে, তা তদন্ত না করে বলা যাবে না। ঘটনার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে ঘটনা তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম আশরাফুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: শেরপুর থেকে দুজন আটক

সামিটের আজিজ খান ও তাঁর পরিবারের সম্পদ বিবরণী চেয়ে দুদকের নোটিশ

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে মামলা

আগুনের কালো ধোঁয়ার ভেতর আলো হয়ে উঠলেন শাহীন

এবার প্রতারণা ও মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ

সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত পাকুন্দিয়ার জাহাঙ্গীরের বাড়িতে মাতম

ছোট ভাই প্রটেকশন বাড়াও— রাকসু জিএসকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

বিজয় দিবসে তেজগাঁও বিমানবন্দর এলাকায় ড্রোন না ওড়ানোর অনুরোধ

খিলক্ষেত থানার পাশে পুলিশের জব্দ করা বাসে আগুন

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক