হোম > সারা দেশ > ঢাকা

উত্তরায় থানা-পুলিশের গাড়িতে আগুন, তাণ্ডবে নিহত ১৫

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি

রাজধানীর উত্তরার ‘উত্তরা পূর্ব’ থানা ও পুলিশের গাড়িতে হামলা ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। চার ঘণ্টা ব্যাপী তাণ্ডবে উত্তরায় ১৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। 

আজমপুরের অবস্থিত ওই থানায় আজ সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি, কাদকে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। 

উত্তরা পূর্ব থানার গেটে তিনজন পুলিশের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া আজমপুরের বাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) সিঁড়িতে একজন পুলিশের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, উত্তরা পূর্ব থানার পাশ থেকে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংঘটনের নেতা কর্মীরা পিস্তল, শটগান দিলে গুলি ছুড়ে। পরে আন্দোলনকারী তাদেরকে ধাওয়া করলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চায়। পরে জনগণ উত্তেজিত হয়ে থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেই সঙ্গে থানায় থাকা গাড়িগুলোতেও আগুন ধরিয়ে দেয়। 

উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) কমান্ডার মো. নাজমুল ইসলাম রাত পৌনে ৮টায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ এখন পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে ৯ জনের মরদেহ রয়েছে। এ ছাড়াও অন্তত ২০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। তবে তারা কারা সেটি এখনো জানা যায়নি।’ 

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক ও মেডিসিন কনসালটেন্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে ৫–৬ জনের মরদেহ এসেছে। সেই সঙ্গে আন্দোলনে আহত শতাধিক মানুষকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। তবে সঠিক সংখ্যাটা এখন বলতে পারছি না।’ 

এ ছাড়াও বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের স্টাফ কোয়ার্টারের সামনের একটি গাছে মধ্যবয়স্ক এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ গাছে ঝোলানো অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। সেটি ভিড় করে ছিল হাজারো মানুষ। 

তাদের অভিযোগ, ‘যুবকটি ছাত্রলীগ করে। সে হাউসবিল্ডিং এলাকায় পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেছে। তার ছোড়া গুলিতে এক শিশু আহত হয়েছে।’ 

তারা বলেন, ‘গুলি শেষ হয়ে যাওয়ার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রসহ অন্যান্য লোকজন তাকে ধরে ফেলে গণধোলাই দেয়। তারপর সে মারা গেলে পায়ে রশি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়।’ 

সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা পূর্ব থানায় হামলার ভাঙচুরের পর বিকেল ৪টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার আজমপুর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে সাইন গ্রেনেড, টিয়ার শেল (কাঁদুনে গ্যাস) ছুড়তে দেখা যায়। 

বিকেল ৪টা ২০ মিনিট থেকে উত্তরার আজমপুরের দিক থেকে পুলিশকে রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়তে দেখা যায়। 

এ সময় অধিকাংশ জনতাকে বাসার রাস্তা ছেড়ে দিতে দেখা যায়। আবার কিছু কিছু উৎসুক জনতাকে পুলিশের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা যায়। 

বিকেল ৪টা ৩২ মিনিটে বিএনএস সেন্টারে সামনে দিয়ে একটি রিকশা যোগে লালটি শার্ট পরিহিতি এক অজ্ঞাত যুবককে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ভেতর দিয়ে আহত অবস্থায় আরও ছয়জনকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ ছাড়াও উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর দিয়ে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখা যায়। 

গুলিবর্ষণ ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উল্লসিত সাধারণ জনগণ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উল্লাসিত জনতার মধ্যে কিছু অতি উৎসাহী মানুষ থানা ও পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং থানা ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে।’ 

তারা আরও বলেন, ‘শুধু থানাতেই নয়, র‍্যাব-১ এর সামনে দিয়ে উল্লাস মিছিল নিয়ে যাওয়ার অতি উৎসাহিতরা র‍্যাব কার্যালয়েও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।’ 

গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য বিকেল সোয়া ৪টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল পোলাপান থানায় ইট পাটকেল মারতে মারতে ভেতরে চলে আসছিল। সেই সঙ্গে থানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করেন।’ 

পুলিশের ওই সদস্য আরও বলেন, ‘ওই সময় যারা থানায় ছিল, তাদের মধ্যে নিরস্ত্র সবাই থানা থেকে বের হয়ে যায়।’ 

এদিকে রাত ৮টা পর্যন্ত থানা-পুলিশকে থানা এলাকা অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিহতের চেষ্টা চালিয়ে দেখা যায়। যদিও থানার চারপাশ থেকে ঘেরাও করে আন্দোলন করছে বিক্ষোভকারীরা। থানার চারপাশে থাকা আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ‘থানার ভেতরে একটি মরদেহ পরে রয়েছে। আরেক যুবক থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে পা ভাঙ্গা অবস্থায় রয়েছে।’ 

বিকেলের আগুন সামান্য থাকলেও রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফের আগুন লাগানো হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। পরে দূর থেকে দেখা যায়, থানা ভবনের নিচ তলা দাউ দাউ করে জ্বলছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা আসার পথে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে তাদেরকে আটকে দেয় বিক্ষোভকারীরা। 

সর্বশেষ রাত ১০টা পর্যন্ত উত্তরার আজমপুর, বিএনএস সেন্টার, রাজলক্ষ্মী এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায়। 

থানায় অগ্নিকান্ড ভাঙচুরের এবং হতাহতের বিষয়ে উত্তরা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি। 

অপরদিকে ঢাকা উত্তরা সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শরীফুল ইসলাম সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেন, ‘তার বাসায় হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুর চলছে।’

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

রাষ্ট্রীয় শোক: ঢাকায় ৩ দিন আতশবাজি, পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বাড়ানো হলো মেট্রোরেলের ট্রিপ

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন