সাভারে দৃষ্ট প্রতিবন্ধীরা নিজেদের মার্কেটকে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে বাঁচাতে বিক্ষোভ কর্মসূচির পর হামলার শিকার হয়েছেন। দখলদারদের সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সাভারে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার অধীন এনএফভিআই শপিং কমপ্লেক্সের (অন্ধ মার্কেট) সামনে এ মানববন্ধন করেন প্রায় ৩ শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এ সময় সাভার-বিরুলিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে আলোচনা শেষ করে সবাই মার্কেটে ঢুকে গেলে বেলা ২টার দিকে তাদের ওপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা জানান, একটি মহল রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় জোরপূর্বক মার্কেট দখল চেষ্টা ও মার্কেটের সামনের ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকান বসিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। অভিযুক্তরা হলেন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পাভেল আহম্মেদ ওরফে তোতলা পাভেল, আবদুস ছালাম ফরাজী, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বাহাদুর ইমতিয়াজ, আনোয়ার হোসেন, বেলাল উদ্দিন, রিপন মিয়া, হারুন অর রশিদ, ইজ্জত আলী, হেলাল, মো. ইব্রাহিম বাবু ও জলিল।
মানববন্ধনে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব মো. আইউব আলী হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন থেকে তিন শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মিলে এনএফভিআই শপিং কমপ্লেক্স (অন্ধ মার্কেট) পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে পাভেল আহম্মেদ ও আবদুস ছালাম ফরাজী মিলে দুই তলায় একটি দোকান ভাড়া নেয়। তারা মার্কেটের দোকানদারদের ভাড়া তাদের কাছে দিতে বলে। সর্বশেষ তারা মার্কেটের সামনের নির্মাণাধীন পানির রিজার্ভ টাঙ্কির ওপর অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সংস্থার সহসভাপতি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আহত মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমি তো অন্ধ মানুষ, চোখে দেখি না। তারা ভারী কিছু দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেছে। আমার মাথা দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। পরে আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষ হওয়ার পরপরই মার্কেটে প্রবেশ করে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় পাভেলের সহযোগীরা। আমিসহ প্রায় ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্য থেকে বাকি ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
অভিযুক্ত পাভেল আহম্মেদ বলেন, ‘মার্কেটের ভেতরে আমাদের একটি ব্যবসায়িক অফিস আছে ৩ তলায়। এ ছাড়া ২ তলায় দোকান আছে। আমি ১০-১২ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করি। আমার অফিসে তারাই হামলা চালিয়েছে। আমার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। আমি কারও কাছে দোকানও ভাড়া দিইনি, ফুটপাতও দখল করিনি। এসব অভিযোগ সাজানো নাটক। হামলায় আমাদের ৩ জন আহত হয়েছেন।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।