হোম > সারা দেশ > কুমিল্লা

হাসপাতাল থেকে কবিরাজের কাছে সাপে কাটা রোগী, ‘পানপড়া’ খেয়ে মৃত্যু

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় সাপে কামড় দেওয়া এক গৃহবধূকে নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসাকালীন রোগীকে বাঁচানোর নিশ্চয়তা চায় স্বজনেরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ধৈর্য ধরতে বলেন এবং পুরো চিকিৎসা শেষ করার সময় চান। কিন্তু স্বজনেরা এর মাঝেই রোগীকে জোর করে নিয়ে যান কবিরাজের কাছে। সেখানে খাওয়ানো হয় পানপড়া। তাতেও কাজ না হওয়ায় ফের হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। 

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার গোয়ারি ভাঙা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সকালে নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় গৃহবধূকে সাপ ছোবল দেয়। তবে সাপটিক কোন প্রজাতির তা জানাতে পারেনি কেউ। 

নিহত গৃহবধূর নাম তানজিনা আক্তার (২৮)। তিনি হোমনা উপজেলার গোয়ারি ভাঙ্গা এলাকার আলী আহমেদের স্ত্রী। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। 

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, তানজিনাকে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার মাঝামাঝি অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা সেটি না মেনে তাকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কাজ না হয়ে আবার হাসপাতালে ফেরার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসক বলছেন, তানজিনাকে ছোবল দেওয়া সাপটি বিষধর ছিল। 

তানজিনার স্বামী আলী আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, সকাল ৭টার দিকে নিজ বাড়ির বিছানাতেই শুয়েছিল তানজিনা। এ সময় তাঁর বাম পায়ে আঙুলে সাপের ছোবল টের পায়। উঠে খাটের নিচে তাকাতেই কালো রঙের একটি সাপকে চলে যেতে দেখে। পরে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৮টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ওষুধ দেওয়ার পর সেখান থেকে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে ‘পানপড়া’ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পানপড়া খাওয়ানোর পরও কোনো কাজ হয়নি। পরে সেখান থেকে তানজিনাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ফেরার পথে তানজিনার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি ঘটলে তাঁকে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। 

আলি আহমেদ বলেন, ‘কি সাপে কেটেছে বলতে পারছি না। তবে সাপটি কালো রঙের ছিল। স্থানীয়রা এ ধরনের সাপকে কালি ফানকনামে ডাকে।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাইফুল ইসলাম জানান, তানজিনাকে যখন নিয়ে আসে তখন তার শরীরে বিষক্রিয়ার বিভিন্ন উপসর্গও দেখা গেছে। তার চোখের পাতা বারবার পড়ে আসছিল এবং গলা শুকিয়ে আসছিল। চিকিৎসকেরা তাঁকে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার মাঝামাঝি সময়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে যায়। পরে আবার হাসপাতালে আনলে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। 

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘সাপে কাটা রোগী তানজিনা আসার পর তাকে অ্যান্টিভেনমের ডোজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকাকালীন তার পরিবারের লোকজন তাকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করে এবং নিয়ে যায়। পরে শুনেছি তাকে মৃত অবস্থায় আবার হাসপাতালে আনা হয়েছে।’ 

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাপটি কী ধরনের সেটি তিনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। তবে তানজিনাকে বিষধর সাপে কেটেছে।’ 

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবাইকে ঝাড়ফুঁক ও কুসংস্কার থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। সাপে কাটলে সবাই হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম আছে। তা ছাড়া সদর হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।’

থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে গরু চরাতে নিষেধ করায় পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম

কুমিল্লায় ধানের শীষের বিপক্ষে লড়বেন খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস মতিন

চৌদ্দগ্রামে ঘন কুয়াশায় দুই লরির সংঘর্ষ, চালক ও সহযোগী নিহত

দলবদলেও রক্ষা পেলেন না ছাত্রলীগ নেতা, ডিবির হাতে আটক

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

কুয়েতে কুমিল্লার যুবকের মৃত্যু, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যা

আমাদের বিরোধিতা যারা করে, তারা রাতে গোমতী নদীতে মাটি কাটায়, দিনে ঘুমায়: হাসনাত আবদুল্লাহ

মেয়ে দেখা মানে বিয়ে ফাইনাল না: মনোনয়ন প্রসঙ্গে হাজি ইয়াছিন

হোমনা থানায় হেফাজতে থাকা এক নারী আসামির মরদেহ উদ্ধার