কুমিল্লার মুরাদনগরে একটি ঘরের মাটি খুঁড়ে মনির (৪০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ইউসুফনগর গ্রামের ইব্রাহিম (২০) নামের এক যুবকের বসতঘরে লাশটি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় দুই নারীসহ তিনজনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে উত্তেজিত জনতা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে হত্যার এ ঘটনা ঘটেছে। ইব্রাহিমকে দিয়ে মনিরকে খুন করিয়েছেন মনিরের ছোট ভাই তাজুল ইসলামের স্ত্রী শাহিদা আক্তার। নিহত মনির ইউসুফনগর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। ইব্রাহিম (২০) একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযুক্ত ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগমের দেওয়া তথ্যে স্থানীয় বাসিন্দারা লাশটি খুঁজে পান। তাঁরা বলেন, শাহিদার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ইব্রাহিমের। বিষয়টি জানতে পেরে ১৫ দিন আগে শাহিদা আক্তারকে ঘরোয়াভাবে শাসন করেন ভাশুর মনির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদা ও ইব্রাহিম মনিরকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। পরে গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে এশার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় মনিরকে খুন করেন ইব্রাহিম। খুনের পর লাশ ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচে চাপা দেওয়া হয়। বিষয়টি দেখে ফেলেন ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগম। মুখ বন্ধ রাখতে ইব্রাহিম তাঁর মা আমেনা বেগমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। প্রাণনাশের ভয়ে ঘটনার দুই দিন মুখ বন্ধ রাখলেও আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন আমেনা বেগম। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচে পুঁতে রাখা মনিরের লাশ শনাক্ত করেন এলাকাবাসী।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিরের লাশ উদ্ধার করে মুরাদনগর থানা-পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহিদা আক্তার, ইব্রাহিম ও ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগমকে এলাকাবাসী আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা শাহিদা ও ইব্রাহিমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, মনিরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহিদা আক্তার ও ইব্রাহিম নামের দুজনকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে আজ সকালে কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক কারবার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে একটি বাড়ি ঘেরাও করে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একজন গুরুতর আহত হন। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।