কুমিল্লার চান্দিনায় বড় ভাইয়ের কাছে পাওনা টাকা না পেয়ে ছোট ভাইয়ের নামে মামলা এবং টাকা আদায়ের জন্য বিএনপি নেতার চাপের মুখে মাহবুব আলম রুবেল নামে এক কৃষক দল নেতার আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে মোবাইল ফোনে একটি অডিও বার্তায় বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুবেলের মৃত্যু হয়। তিনি চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় কৃষক দলের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪১ বছর।
পরদিন রোববার (২৯ জুন) নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম চান্দিনা থানায় হত্যা মামলা করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা গাজী হাসান মাহমুদ হানিফ একই ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মাইজখার ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
রুবেলের স্ত্রী রেহেনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর বড় ভাই মফিজের সঙ্গে ২০১৬ সালে হানিফের আর্থিক লেনদেন হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট মফিজ বরগুনায় মারা যান। এরপর হানিফ আমার স্বামী রুবেলের নামে মামলা করেন এবং টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। বাজার করার টাকাও ছিল না। অতিরিক্ত মানসিক চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন রুবেল।’
মৃত্যুর আগে রুবেল তাঁর মোবাইল ফোনে একটি অডিও বার্তায় বলেন, ‘হানিফ ভাই টাকার জন্য আমার নামে মামলা দিয়েছে। ফোন করে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার নামে মামলা করতে বলে। রাজি না হওয়ায় আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। আমি উপজেলা বিএনপির নেতাদের জানিয়েও কোনো সহায়তা পাইনি। এ অবস্থায় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
স্থানীয়দের ভাষ্য, টাকা আদায়ে মামলার পর বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক চাপে ছিলেন রুবেল। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে বিষ পান করেন তিনি। প্রথমে তাঁকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত গাজী হাসান মাহমুদ হানিফ বলেন, ‘মফিজ মারা যাওয়ার পর রুবেলসহ তিনজন টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কথা রাখেননি, তাই মামলা করেছি। আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে মামলা দিতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।’
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘মামলার পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।’