কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বেলা ২টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের ঝাউবনে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় অন্তত ৫০টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের সদস্য মোতায়েন করা হয়।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসন বালিয়াড়িতে বসানো দোকানপাট ও স্থাপনা সরিয়ে নিতে বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এ সময়ের মধ্যে অনেকে টংদোকান সরিয়ে নেন এবং বালিয়াড়ি থেকে তুলে সড়কে ফেলে রাখেন। এরপরও যাঁরা দোকান অপসারণ করেননি, তাঁদেরগুলো উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সৈকতের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অংশীজনদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কক্সবাজারের সদ্য যোগদান করা জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে না সরানোর কারণে অন্তত ৫০টি টংদোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। বালিয়াড়ি দখলমুক্ত রাখতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে। প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় কেউ যেন আর স্থাপনা না করেন, সে জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছরে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে কয়েক শ দোকানপাট ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে গত মাসে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের বদলির আদেশ আসার পরপরই সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বানিয়ে বসানো হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। সৈকতের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় এসব স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ ওঠে।
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার অঞ্চল থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর ও ২০২৩ সালেও একাধিকবার অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল।