চুয়াডাঙ্গার জীবননগর শহরের মহানগর উত্তরপাড়ায় পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে মেয়ের ওপর উত্তেজিত হয়ে বাবার মৃত্যুর হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। আজ বুধবার পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ে নাসরিন আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায়, জীবননগর শহরের মহানগর উত্তরপাড়ার নুরুল হক ব্যাপারী (৭০) দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাঁর ছয় শতক ভিটে জমি আছে। দুই মেয়ে নাসরিন আক্তার (৩৫) ও ফাতেমা খাতুনের (৩০) মধ্যে ওই জমির হিস্যা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। নাসরিন স্বামী সন্তান নিয়ে ঢাকা শহরে বসবাস করেন। সম্প্রতি নাসরিন পিতার সম্পত্তির হিস্যা বুঝে নিতে জীবননগরে আসে। তাঁর ছোট বোন ফাতেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন জাল দলিলের মাধ্যমে পিতার জমি হাতিয়ে নিয়েছে। এ নিয়ে দুই বোনের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌঁছে। বাবা নুরুল হক তাঁর সম্পত্তি ছোট মেয়ে ফাতেমাকে গোপনে লিখে দিয়েছে এমন অভিযোগ তোলেন নাসরিন। এতে তিনি ছোট বোন ফাতেমার পাশাপাশি পিতামাতার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নুরুল হক ব্যাপারীর স্ত্রী শাহিদা বেগম তাঁকে খেতে দেয়। এ সময় তিনি বলেন, ‘তরকারি কে রান্না করেছে?’ জবাবে তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘নাসরিন রান্না করেছে।’ তখন নুরুল হক বলেন, ‘ও পাগল, ও–কি তরকারি রান্না করতে পারে।’ এ কথা শোনা মাত্র মেয়ে নাসরিন রেগে যায় এবং তাঁর মা শাহিদার গায়ে হাত তোলেন। এ সময় বাবা নুরুল হক উত্তেজিত হয়ে মেয়ে নাসরিনের পিঠে একটি থাবা দেয় এবং কিছু সময় পরই অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান।
এ সময় হইচই শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে নুরুল হককে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতাল নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার ব্যাপারে থানায় নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটককৃত নাসরিনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা মর্গে পাঠানো হয়েছে।