চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গা ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সহযোদ্ধা, শুভানুধ্যায়ী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামে। দল-মতনির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ তাঁদের প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
জানাজার আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছেলুন জোয়ার্দ্দারকে রাষ্ট্রের পক্ষে গার্ড অব অনার দেয় জেলা পুলিশের একটি দল ও চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নয়ন কুমার রাজবংশী। পরে জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি স্ত্রী, একমাত্র কন্যা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ওই দিন (শুক্রবার) রাত ১১টায় রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য দেন মরহুমের মেজ ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। যিনি ৫ আগস্টের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন।
সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ১৯৭১ সালে মুকুট বাহিনীর সদস্য হিসেবে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। পরে ১৯৭৩ সালে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা যুবলীগের সভাপতি হন তিনি। ১৯৭৯ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য মনোনীত হন। দশম জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
রাজনীতির বাইরেও চুয়াডাঙ্গার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, যার আমৃত্যু চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উচ্চশিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তিনি দীর্ঘদিন চুয়াডাঙ্গা রাইফেল ক্লাব, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব পালন করেন।