হোম > সারা দেশ > ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রলারডুবি: ‘মেয়েকে সুন্দর করে নিজ হাতে সাজিয়ে দিয়েছিলাম, ফিরে এল না’

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ির সবাইকে চাঙ্গা করে রাখত শিশু নাশরা মনি। বাড়ির পাশের মামা ও কাকাদের কাছ চাইতেন নিয়মিত চকলেট আর বিস্কুট। প্রতি মুহূর্তে বাড়ির মানুষদের মাতিয়ে রাখত নাশরা। প্রবাসী হারিস মিয়া ও সাকিলা আক্তার রানু দম্পতি তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে নাশরা মনি (৩) সবার ছোট। এরই মধ্যে সে জয় করে নিয়েছিল সকলের মন। কিন্তু বিধিবাম; চাচির বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল নাশরা মনি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ট্রলারে বাড়ি ফেরার সময় নাশরা মনি ও চাচি কাজল বেগম ট্রলারের ভেতরে বসেন। পথে অপর দিক থেকে আসা বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে ট্রলারটি ডুবে যায়। এই সময় চাচা ফারুক মিয়া আহত হয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। পরে রাতে কাজল বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় নিখোঁজ ছিল নাশরা মনি।

শনিবার সকালে উদ্ধার কাজ শুরু করেন কিশোরগঞ্জ থেকে আসা ডুবুরি দল। এ সময় প্রায় আধঘণ্টা চেষ্টার পর উদ্ধার হয় ফুটফুটে শিশু নাশরা মনির নিথর মরদেহ। এ সময় তার মরদেহ দেখে আশপাশের মানুষ ও আত্মীয়স্বজনেরা আহাজারি শুরু করেন। তার মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসন। নাশরা মনির মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে মা ও তার ভাইবোনেরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় তাদের কান্নায় পৈরতলার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।

নিহত নাশরা মনির বড় বোন ইবরা আক্তার জানান, নাশরা মনিকে কখনো ভোলা যাবে না। ওর প্রতিটি স্মৃতি আমাদের প্রতিনিয়ত কাঁদাচ্ছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়ির সকলকে মাতিয়ে রাখত নাশরা মনি। সামান্য দিনের জন্য পৃথিবীতে এসে ভালোবাসা দিয়ে নাশরা চলে গেল পরপারে। দোয়া করি নাশরা যেন ভালো থাকে।

নাশরা মনির চাচা মাসুদ মিয়া জানান, শুক্রবার বিকেলের পর থেকে নাশরা মনির খোঁজে মধ্য রাত পর্যন্ত লইস্কার বিলে অবস্থান করে খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে ভাবি নাশরা মনির দেহটাও পাওয়া যাবে না। তবে শনিবার সকালে পাওয়ার পর না পাওয়ার কষ্টটা কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।

নাশরা মনি মা সাকিলা আক্তার রানু জানান, মেয়েকে সুন্দর করে নিজ হাতে সাজিয়ে দিয়েছিলাম। শুক্রবার বিকেলে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। শনিবার ফিরল ঠিকই। তবে লাশ হয়ে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। 

এদিকে শনিবার দুপুরে বাদ জোহর নাশরা মনির জানাজা শেষে স্থানীয় শেরপুর কবরস্থানে তাকে নিহত চাচি কাজল বেগমের পাশে দাফন করা হয়। 

উল্লেখ, শুক্রবার বিকেলে জেলার বিজয়নগরের চম্পকনগর নৌকাঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি যাত্রীবাহী নৌকা সদর উপজেলার আনন্দবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে লইস্কা বিল এলাকায় বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবোঝাই নৌকাটি তাৎক্ষণিক ডুবে যায়। প্রথমে এলাকাবাসীরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

ভোটের মাঠে যারা বাধা হবে, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না: আমীর খসরু

কুমিল্লা-৪: হাসনাত আবদুল্লাহর সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াত প্রার্থী

পটিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত, আহত ৪

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়ায় বন্দুকসহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

চট্টগ্রামে গিয়াস কাদেরের আসনে গোলাম আকবরকেও মনোনয়ন বিএনপির

সুষ্ঠু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে: বদিউল আলম

চট্টগ্রামে দুর্ঘটনায় প্রাইভেট কার আরোহী যুবদল নেতা নিহত

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ, দুর্ভোগ