বান্দরবানে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো জেলার সব উপজেলায় সড়ক, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে সারা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বান্দরবান জেলা।
বন্যায় এখন পর্যন্ত চারজন নিহত ও দুজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বন্যায় এখন পর্যন্ত বান্দরবান পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ড কালাঘাটা এলাকার বাশি শীলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী শীল (৫২) ও তাঁর মেয়ে বুলু শীল (২২), নাইক্ষ্যংছড়ি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পংসা মারমা (৬০), আলীকদম নয়াপাড়া এলাকার মো. মুছা নামে এক রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া বান্দরবান সদর ইউনিয়নের কানাপাড়া এলাকার ছায়াবি তঞ্চঙ্গ্যা (৩৮) ও নাইক্ষ্যংছড়ি রিওপাড়া এলাকার মেনপয় ম্রো নামে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
চলতি মাসের ২ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত টানা ছয় দিনের ভারী বর্ষণে জেলার প্রায় সব উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে সড়ক, বিদ্যুৎ, মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পুরো জেলায় ভেঙে পড়ে সব রকমের যোগাযোগব্যবস্থা। গতকাল বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা নাছির উদ্দীন জানান, অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দোহাজারী গেছেন এবং ডুবে যাওয়া ট্রান্সফরমারগুলোর সম্ভাব্য ক্ষতি যাচাই করতে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। তারা পরীক্ষা করার পর বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করা হবে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, জেলাজুড়ে সম্পূর্ণভাবে পানি না নামায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে, যাতে কেউ অনাহারে না থাকেন। যদিও এ পর্যন্ত কেউ স্বেচ্ছায় এসে সহায়তা চায়নি। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। শুকনো, রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে ১০০ টন চাল ও ১০ লাখ টাকা সহায়তা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো সড়ক ও জনপদ বিভাগকে মেরামত করার জন্য বলা হয়েছে।