সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান শিকদার।
নিহত পাঁচজনের মধ্যে মনিরুজ্জামান নামের একজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তিনি কুমিরা ফায়ার স্টেশনে নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের ১৫ জন কর্মী এখনো সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আরো দুজন কর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন শাহজাহান শিকদার।
ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দগ্ধ ও আহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দীন তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার রাত ৯টার লোড ইয়ার্ডে রাসায়নিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রথম দিকে আগুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস ও ডিপোর কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাছ থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন। ডিপোর কর্মীদের কেউ কেউ আগুনের দৃশ্য ভিডিও করছিলেন। রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে তাদের অনেকেই আগুনে তলিয়ে যান।
ডিপোতে আগুনে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। তিনি ডিপোর আইসিডি-২ শাখায় কর্মরত। তাঁর অবশ্য রাতে ডিউটি ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে পাশের কোয়ার্টার থেকে অন্যদের নিয়ে ছুটে আসেন রাশেদুলও। তিনি বলেন, ‘আগুনের দৃশ্য দেখছিলাম। এমন সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে হাতে থাকা মোবাইলটিও হারিয়ে যায়। আগুনের তাপে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছি।’ পরে অন্য সহকর্মীরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
আহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশেকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আহতদের বিভিন্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়া চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।