চট্টগ্রামে ভবন নির্মাণ পরিকল্পনা অনুমোদনে ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর একটি দল এই অভিযান চালায়।
দুদুক সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে দুদকের কর্মকর্তারা সিডিএ চেয়ারম্যানের দপ্তরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করেন। অভিযান শেষে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, ঘুষ দাবিসহ নানাবিধ অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আরও নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। সংগৃহীত নথিপত্র পর্যালোচনার পর কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
দুদক কার্যালয়ের তথ্যমতে, অভিযানকালে নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, হাসান মুরাদসহ ৯ ব্যক্তি চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া মৌজার সৈয়দ শাহ রোডের চারটি দাগে ১ হাজার ৩৭৫ দশমিক ৫৩ বর্গমিটারের প্লটে দুটি বেসমেন্ট ও ১৩ তলা ভবন নির্মাণের জন্য সিডিএতে আবেদন দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৩ মে সিডিএর একটি স্মারকমূলে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র অনুমোদন প্রদান করা হয়। ২০২৪ সালে ২ এপ্রিল আবেদনকারীরা ভবনের পরিকল্পনা পাশের জন্য নকশা দাখিল করেন, যা ইমারত নির্মাণ কমিটি-১-এর ১৪৮তম সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। এ-সংক্রান্ত কার্যবিবরণী রেজিস্টারেও ইমারত নির্মাণ কমিটির সদস্যরা স্বাক্ষর করেন।
দুদক কর্মকর্তারা নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখতে পান, নথির নোটাংশ ১১-এ অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ অনুমতিপত্র জারি করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। অথচ নোটাংশের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ খালি রেখে ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয় অবতারণা করে সিডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরস্পর যোগসাজশে আবেদনকারীকে ঘুষ দিতে বাধ্য করাসহ আজ পর্যন্ত ভবন নির্মাণ অনুমতিপত্র ইস্যু করা থেকে বিরত থাকেন।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, ঘুষ আদায় করতে সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আবেদনকারীকে হয়রানি করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। কার্যালয়টির সহকারী নগরপরিকল্পনাবিদ কামাল হোসেন, সহকারী অথরাইজ অফিসার মুহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন, তৎকালীন অথরাইজ অফিসার-১ মোহাম্মদ হাসান, ডিএ আলমগীর তালুকদার, সেকশন অফিসার সুবীর বড়ুয়ার ঘুষ দাবির অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।