চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) র্যাবের অভিযানে ২১ দালালকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার (২৫ জুন) নগরের পাঁচলাইশ থানায় অবস্থিত হাসপাতালটিতে সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এই অভিযান চলে। এ সময় হাসপাতালের গাইনি, শিশুসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে অন্তত ৭০ জনকে আটক করে র্যাব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ ইশরাকের নেতৃত্বে র্যাব এই অভিযান চালায়।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থলে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযানে প্রায় ৭০ জনকে আটক করি। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ ইশরাক সাংবাদিকদের জানান, চমেক হাসপাতালে আটক দালালদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে আগেও একই অপরাধে যুক্ত থাকায় তাঁদের সাজা বেশি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আজ সকালে র্যাবের একটি দল এসে পুরো হাসপাতাল ঘিরে ফেলে। এ ছাড়া আগে থেকে সাদা পোশাকে সেখানে থাকা র্যাবের সদস্যরা দালালদের নজরদারিতে রাখেন। পরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালিত হয়।
সূত্রমতে, চমেক হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে দালালদের বিরুদ্ধে রোগী ও রোগীর স্বজনদের হয়রানি, বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাবে রোগীদের নিয়ে গিয়ে টাকা হাতানো, ওয়ার্ডের রোগীর জিনিসপত্র, মোবাইল ফোন, সরকারি ওষুধ চুরিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় পুলিশি অভিযানে দালাল আটক হলেও তাঁদের দৌরাত্ম্য কমেনি।
অনেক দালাল রয়েছে যারা বারবার আটকের পর ছাড়া পেয়ে পুনরায় হাসপাতালে একই অপরাধ করে যাচ্ছে। আইনি দুর্বলতার কারণে পুলিশের হাতে আটকের পর নামমাত্র জরিমানা দিয়ে দালালেরা সহজে ছাড়া পাওয়ায় একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের আইনগত ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চমেক হাসপাতাল ঘিরে ব্যবসা করা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, রোগ নির্ণয়কেন্দ্র, ক্লিনিক ও ফার্মেসির মালিকদের বিরুদ্ধে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকুক। আমরাও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চাই, হাসপাতালটি দালালমুক্ত হোক।’