পূর্ব আকাশের সূর্যটা উঁকি দিচ্ছে। চারদিকে কার্তিকের ভোরের কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। ধানখেতের মাঝখান দিয়ে কাদাযুক্ত আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। সব মানুষের মাঝে নীরবতা আর যেন স্বজনহারার বেদনা। পুরো গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গ্রামের সবচেয়ে শান্ত, ভদ্র সুদর্শন ছেলেটির নিথর দেহকে শেষবারের জন্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছে সব বয়সী মানুষ।
মাটির ঘরে সামনের উঠোনে পড়ে আছে সোহরাবের নিথর দেহ। আর সারিবদ্ধ হয়ে শেষবারের জন্য দেখতে লম্বা লাইনে ভিড় করেছেন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধসহ সোহরাবের সহপাঠী এবং দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা অসংখ্য মানুষ। আর মরদেহের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন বাকরুদ্ধ বাবা আনোয়ার হোসেন ও সোহরাবের ছোট ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী মনোয়ার হোসেন শিহাব। আর পাশে প্রিয় সন্তানহারা বৃদ্ধ মা ছালেহা বেগম ও বোন প্রিয়া আক্তারের আহাজারিতে যেন প্রকৃতিরও অশ্রু ঝরছে।
আজ রোববার সকাল ৮টায় জানাজা শেষে বাড়ির পাশে কবরস্থানে মাটির ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত হন সোহরাব। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন সুমন, গুথুমা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আনোয়ার হোসেনসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টা ৩ মিনিটে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর রাত ৯টায় ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় অবস্থিত ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে নিজের গুলিতে আত্মহত্যা করেন সোহরাব। নিহত সোহরাব হোসাইন ফেনীর পরশুরাম পৌর এলাকার বাশপদুয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। আনোয়ার হোসেনের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন সোহরাব।