চট্টগ্রাম কলেজের হোস্টেল গেটের সামনে বসে ছিলেন মেহেরাজ সিদ্দিক পাবেল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাহেল অভি ও মো. মিনহাজ উদ্দিন। তিনজনই ওই কলেজের শিক্ষার্থী। পাশের প্যারেড মাঠের মেলা থেকে বের হয়ে কলেজের দিকে ঢোকার সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ তাঁদের ডাক দেন। ‘এখানে কী করছিস’ বলেই রড ও ছুরি নিয়ে চড়াও হন। এ সময় সবুজের সঙ্গে আরও সাতজন ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।
ঘটনাটি বুধবার বিকেল ৪টার। ওই দিন রাতে চকবাজার থানায় সবুজ মল্লিক সবুজসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন তাঁরা। অভিযোগে রড ও ছুরি দিয়ে মারধর করার অভিযোগ আনা হয়। মারধরের শিকার মেহেরাজ সিদ্দিক পাবেল ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, জাহেল অভি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের, মো. মিনহাজ উদ্দিন ইতিহাস বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
জাহেল অভি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই শিবিরের স্টাইলে সবুজ মল্লিক সবুজ ডেকে নিয়ে রড ও ছুরি দিয়ে মারধর করেন। মারধরের কারণ জানতে চাইলে আরও মারধর করা হয়।’
মেহেরাজ সিদ্দিক পাবেল বলেন, ‘আমরা তিন বন্ধু মিলে পাশের মেলায় ঘুরতে এসেছিলাম। তারপর নিজের কলেজে যাওয়ার সময় সবুজের নেতৃত্বে সাতজন মারধর করেন। এ বিষয়ে চকবাজার থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, ‘ছাত্রলীগের একটি পক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেরে চকবাজার ঘিরে রাজত্ব কায়েম করতে চায়। দীর্ঘদিন শিবিরের আধিপত্য থেকে মুক্ত করে আবারও ওই অরাজক পরিস্থিতির দিকে যারা ঠেলে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেব। কলেজে শিক্ষার্থীরা ঘুরবে, মুক্ত মতের চর্চা করবে—সেটিই তো হওয়া উচিত। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’
সুভাষ মল্লিক সবুজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।