ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘিরে চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে হেফাজত কর্মী নিহতের ঘটনার মামলায় সহকারী পুলিশ সুপার ও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৬–এর আদালতের বিচারক নুরুল হারুন পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রফিকুল ইসলামকে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার উত্তরায় এপিবিএন সদরের সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন রফিকুল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ চট্টগ্রামে আনা হয়।
২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে সেদিন দুপুরে হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেছিলেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। সেখানে গুলিতে মাদ্রাসার চার শিক্ষার্থী নিহত হন। সেদিন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা মিছিল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়।
এদিকে ঘটনার দিন হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোয় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়। এসব মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এর ১৭ দিন পর ২৩ আগস্ট রফিকুল ইসলাম নামে এক হেফাজত কর্মী নিহতের ঘটনায় সাবেক ওসি রফিকুল ইসলামসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন। নিহতের বাবা আব্দুর জব্বার বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় চট্টগ্রাম জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, এএসপি শাহাদাত হোসেন, এএসপি আব্দুল্লাহ আল মাসুমসহ পুলিশের আরও কতিপয় সদস্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল আলমসহ ২৮ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।