ফেনীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৯ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ জনকে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন আটজন। একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানকেও আসামি করা হয়েছে। তবে প্রতিটি মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী আসামি হয়েছেন।
আজ রোববার সকালে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফেনী মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে থানায় সর্বশেষ মামলাটি হয়েছে। গত ৫ আগস্ট দুপুরে শহরের জেল রোডে জাফর আহম্মদকে (৫৩) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তাতে ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২০৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। নিহত জাফর আহম্মদ পেশায় টমটমচালক ছিলেন। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুরের এলাকায়।
একই সূত্র জানায়, গত ৪ আগস্ট মহিপালে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নির্বিচার গুলিতে মাহবুবুল হাসান মাসুম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার রাতে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ১৬২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এসব মামলায় জেলার অর্ধশতাধিক সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় করা আটটি মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি করে অস্ত্রধারীরা। তাতে ৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি ও সিসি ফুটেজে দেখা গেছে, অস্ত্রধারীরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী।