৪০ বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ২০০টি পাহাড় ছিল, যার ৬০ শতাংশ এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিযোগ আনেন।
বক্তারা বলেন, ২০০৭ সালে পাহাড় ধসে ১২৯ জন মারা যাওয়ার পর শক্তিশালী পাহাড় রক্ষা কমিটির প্রদত্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পাহাড় রক্ষায় বেলার করা মামলায় ২০১২ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্ট সুনির্দিষ্ট রায় দিয়েছে। রায়ে পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ে নির্মিত স্থাপনাসমূহ গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন হাইকোর্টের সেই আদেশ বাস্তবায়ন করছে না।
বক্তারা আরও বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে টিকে থাকা পাহাড় রক্ষায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ, সিটি করপোরেশন এক হয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার বিকল্প নাই।
বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার ও সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ মেসবাহুজ্জামান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধে তিনি বলেন, পাহাড় হচ্ছে পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় খুঁটির মতো, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করার পাশাপাশি মানুষ এবং জীব বৈচিত্র্যের সুপেয় পানির আঁধার। ক্রমাগত পাহাড় ধ্বংস হয়ে গেলে চট্টগ্রাম মহানগরী পরভূমিতে পরিণত হবে। ক্রমবর্ধমান ইট কংক্রিটের সৃষ্ট উত্তাপ পরিশোধনের বিকল্প না থাকায় নগরীর তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। পাহাড় কেটে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন করে মানুষ যতটুকু আর্থিক লাভবান হচ্ছে, বাস্তবে প্রাকৃতিক ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।