হোম > ইসলাম

উত্তরবঙ্গের ধর্মীয় শিক্ষার স্তম্ভ বগুড়া জামিল মাদ্রাসা

মাওলানা আজিজুল হক

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত প্রাচীন জেলা বগুড়া এক সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। এর কেন্দ্রস্থলের কাছে অবস্থিত প্রাচীন রাজধানী মহাস্থানগড় (পূর্বের পুণ্ড্রনগর)। বগুড়া শুধু তার দই, লাল মরিচ ও শিল্প-বাণিজ্যের জন্যই পরিচিত নয়, এটি উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান শিক্ষানগরী হিসেবেও বিশেষভাবে সমাদৃত। এই শিক্ষা ও সংস্কৃতির ভূমিতে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক এবং বৃহৎ কওমি বিদ্যাপীঠ হলো আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম (জামিল মাদ্রাসা)।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা ও বিস্তার

বগুড়া শহরের চক ফরিদ কলোনি এলাকায় পুলিশ লাইনসসংলগ্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উত্তর-পশ্চিম পাশে প্রায় ৪০ বিঘা জমির ওপর বৃহৎ এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত। জামিল মাদ্রাসা নামে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠান মূলত জামিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুফতি সুহাইল উদ্দিনের উদ্যোগে গড়ে ওঠে। দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্র মুফতি সুহাইল উদ্দিনের আগ্রহে ১৯৬০ সালের ৪ জানুয়ারি আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক আজিজুল হক (রহ.) এবং হাজি ইউনুস সাহেবসহ (রহ.) কয়েক বুজুর্গ এর ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষা কার্যক্রমের দেখভালের জন্য ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমানকে (রহ.) দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় বছর পর, ১৯৬৭ সালে এখানে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ শিক্ষাস্তর দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) চালু হয়। বর্তমানে এখানে তাফসির, আরবি সাহিত্য, তাজবিদ ও ইফতা (ইসলামি আইন গবেষণা) বিভাগ চালু রয়েছে।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জামিল গ্রুপের মালিকপক্ষ করাচি চলে গেলে মাদ্রাসা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তৎকালীন বগুড়া জেলার খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ুমের তৎপরতায় মাদ্রাসাটি পুনরায় চালু হয়। একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, দুর্ভিক্ষের কঠিন সময়েও শিক্ষকেরা বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রেখেছিলেন; যা শিক্ষকদের চরম আত্মত্যাগ ও ইমানি দৃঢ়তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

পরবর্তীকালে, ১৯৭৭ সালে পটিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাজি ইউনুসের (রহ.) পরামর্শক্রমে মাদ্রাসার পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন মাওলানা ইউছুফ নিজামি (রহ.)। সর্বজনস্বীকৃত এই বুজুর্গ তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত ৩৩ বছর অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। আল্লামা ইউছুফ নিজামির মৃত্যুর পর ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান (রহ.) পুনরায় দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ২০১৫ সাল থেকে মাদ্রাসার বর্তমান মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর সুযোগ্য সন্তান মুফতি আরশাদ রহমানি।

বর্তমান অবস্থা ও প্রভাব

উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ এই জামিল মাদ্রাসায় বর্তমানে ৩ হাজারের বেশি আবাসিক ছাত্র অধ্যয়ন করছে এবং শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। মাদ্রাসাটি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড তানযীমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশের অধীনে পরিচালিত হয় এবং এই বোর্ডের প্রধান কার্যালয় এখানেই অবস্থিত। দেশ-দেশান্তরে এর ব্যাপক সুনাম রয়েছে এবং এখান থেকে শিক্ষা লাভ করে শিক্ষার্থীরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পেশায় নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। বগুড়ার এই প্রাচীন শিক্ষানগরীতে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম যুগ যুগ ধরে দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

লেখক: কলামিস্ট ও আলেম।

মহাসড়কে ছিনতাইকালে হাঁসুয়াসহ গ্রেপ্তার ১

শেরপুরে আমনের বাজারদরে হতাশ কৃষক

শেরপুরে জাল টাকার কারবারি চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

চার দিন ধরে শিবির কর্মী আসাদুল্লাহ নিখোঁজ, পরিবারের উদ্বেগ

বগুড়ায় সাঁজোয়া কোরের সম্মেলনে সেনাপ্রধান

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে থানায় স্বামী

স্কুলব্যাগে ৪ কেজি গাঁজা, দুই কারবারি গ্রেপ্তার

বগুড়ায় বিছানায় দুই শিশুসন্তানের রক্তাক্ত লাশ, গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছিল মা

নিলামে নির্ধারিত পরিমাণের অতিরিক্ত বালু বিক্রি বন্ধ

বগুড়ায় বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আলটিমেটাম