‘মোগো পাঁচজনেরে দুগ্গা আদার আইন্না দেতে মোর স্বামী, হেইয়া মোরা খাইতাম। এহন মোগো কেডা আদার আইন্না দেবে, আর মাইয়া-পোলারে কী খাওয়ামু?’ এভাবেই বিলাপ করছিলেন বরগুনার পাথরঘাটায় নিহত জেলে রিপনের স্ত্রী পাখি বেগম (২৭)। তাঁর স্বামীকে মারধর করে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন মৎস্য বিভাগের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
গত বৃহস্পতিবার বিষখালী নদীতে মৎস্য বিভাগের অভিযানে কয়েকজন জেলেকে আটকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ সময় নদীতে লাফিয়ে জেলে মোহাম্মদ রিপন নিখোঁজ হন। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে নদীতে ভাসমান অবস্থায় জেলে রিপনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার সকালে রিপনের স্ত্রীর পাখি বেগমের দাবি, তাঁর স্বামী একজন সহজ-সরল মানুষ। রিপন সাঁতার জানেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নদীতে মাছ শিকার করেন। সেই হিসাবে রিপন যদি ইচ্ছে করে নদীতে লাফ দিতেন, তাহলে সাঁতরে তীরে আসতে পারতেন।
পাখি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘মোর স্বামীরে মৎস্য বিভাগের লোকজন মাইর্যা নদীত ফালাই দেছে। মুই স্বামী হত্যার বিচার চাই।’ এ সময় রিপনের স্ত্রীর আর্তনাদের জবাব দিতে পারেননি উপস্থিত কেউই। এমন ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা যায়।
পাথরঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলে রিপনের লাশ শনিবার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা না কি অন্য কিছু, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বলা যাবে।’
তবে নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে পাথরঘাটার বিষখালী নদীতে সদর মৎস্য বিভাগের অভিযানে মারধরে ঘটনা ঘটে। এ সময় নদীতে পরে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের জেলে রিপন নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ২২ ঘণ্টা পর শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কালমেঘার ছোনবুনিয়ার একটি জঙ্গল থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় জেলে ও স্বজনেরা।