হোম > বিশ্লেষণ

বদলে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পররাষ্ট্রনীতি

মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় প্রতিটি দেশ তেল-গ্যাসসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। অঞ্চলটির ভৌগোলিক গুরুত্বও অপরিসীম। তাই যুগে যুগে বিশ্বশক্তিদের আকৃষ্ট করেছে অস্থিতিশীল এই অঞ্চলটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে শুরু হওয়া ঠান্ডা যুদ্ধে সৌদি আরব, ইরানসহ (বিপ্লবের আগপর্যন্ত) অঞ্চলটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলো ওয়াশিংটনের পক্ষ নিয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ‘নতুন ঠান্ডা যুদ্ধে’ দেশগুলো তা করছে না।

আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনীতি বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা লেখেন, ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তির পক্ষ নিচ্ছে না, এটা ইতিমধ্যে স্পষ্ট। অঞ্চলটির পরাশক্তি হতে আকাঙ্ক্ষী সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এমনকি ইসরায়েলও চলতি সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি পক্ষ নেয়নি। ইরান তো সরাসরি রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে। তবে সে-ও বিভিন্ন কিছুর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করছে।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, গত ঠান্ডা যুদ্ধে (১৯৪৭ থেকে ১৯৯১) যুক্তরাষ্ট্রের শিবিরে থেকে এই অঞ্চলের নেতাদের চরম শিক্ষা হয়েছে। এই সময়টায় বিশ্বে সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ হয়েছে এই অঞ্চলে। এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীকে হামলা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ও সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলার পর আফগানিস্তান ও ইরাক হামলা করে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা। ২০১১ সালের তথাকথিত আরব বসন্তের মধ্য দিয়ে লিবিয়া, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অঞ্চলটির নেতাদের অভিজ্ঞতাকে আরও পোক্ত করেছে। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সংকটে তারা আগের সেই পুরোনো ভুল আর করতে চাইছে না।

গত ঠান্ডা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। তাই ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া নতুন ঠান্ডা যুদ্ধে সরাসরি কোনো পক্ষ নিতে চায় না অঞ্চলটির নেতারা। 

–মারওয়ান বিশারা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, আল জাজিরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাম্প্রতিক ইসরায়েল ও সৌদি সফর। রিয়াদে আরবের নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। বাইডেনের সফরের তিন দিনের মাথায় ইরানের তেহরানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে ‘আস্তানা শীর্ষ সম্মেলন’। এসব কিছুর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন পররাষ্ট্রনীতির ঘোষণা রয়েছে।

বিশারা মনে করেন, নতুন বিশ্বব্যবস্থায় এই অঞ্চলের নেতাদের অবস্থান ভাসা-ভাসা, এটা তাদের নীতিরই অংশ। এর ফলে তারা পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে সহজে খাপ খাওয়াতে পারবে।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশের ইরান নিয়ে উদ্বেগ আছে। এ কারণে ইসরায়েলের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে একটি আকাশ প্রতিরক্ষা জোটের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে সই করলেও ইরানকে লক্ষ্য করে সামরিক জোট না করার কথা জানিয়েছে আমিরাত। তাই বলা যায়, বর্তমান মধ্যপ্রাচ্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক পরিপক্ব।

ভারতকে একঘরে করতে দক্ষিণ এশিয়ায় নয়া জোটের সন্ধানে পাকিস্তান, সফল হবে কি

পুতিন জানেন—ইউক্রেনের ‘সময় ফুরিয়ে আসছে’, যুদ্ধ শেষের তাড়া নেই

দোনেৎস্ক: শান্তি-আলোচনার টেবিলে পুতিন-জেলেনস্কির অন্তিম বাধা, এর গুরুত্ব কতটা

কী হবে, যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ কেড়ে নেওয়া হয়

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

পুতিন-মোদির আসন্ন বৈঠকের মূলে কী আছে

শাহেনশাহ-ই-পাকিস্তান: আসিম মুনিরের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার স্বপ্ন কি তাসের ঘর

যে ইমরান খানকে আমি চিনতাম—শশী থারুরের স্মৃতিকথায় আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার উত্তেজনায় রাশিয়া ও চীন কেন নীরব

দুবাইয়ে তেজস দুর্ঘটনা: সামনে আসছে ভারতের যুদ্ধবিমান কর্মসূচির পুরোনো দুর্বলতা