হোম > বিশ্লেষণ

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহু কি খুশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি সমর্থন জানানোর পর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আবার হিব্রু ভাষায় ইসরায়েলি জনগণের উদ্দেশে বলেছেন—কোনোভাবেই তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র মেনে নেননি এবং গাজার বেশির ভাগ অংশে ইসরায়েলি সেনাই অবস্থান করবে।

ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনায় ইসরায়েলের অনেক দাবি পূরণের ইঙ্গিত আছে—যেমন ইসরায়েলি বন্দীদের ফেরত আনা, হামাসকে রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে ধ্বংস করা এবং গাজায় একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, যা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না।

তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, এই সমঝোতায় রাজি হয়ে যাওয়া নেতানিয়াহুর জন্য রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তিনি এত দিন সরকার ধরে রেখেছেন মূলত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তাই প্রশ্ন হচ্ছে, ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর নেতানিয়াহু কি সত্যিই যুদ্ধ শেষ করতে চান, নাকি নতুন অজুহাতে লড়াই চালিয়ে যাবেন?

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা নেতানিয়াহুকে নির্বাচনের আগে নিজেকে ‘যুদ্ধজয়ী নেতা’ হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ দেবে। তিনি দাবি করতে পারবেন যে, তিনি হামাসকে ধ্বংস করেছেন, গাজাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন এবং এখন শান্তির পথে হাঁটার সময় এসেছে। তবে এটিই তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। কারণ যুদ্ধ শেষ করার যে কোনো পদক্ষেপে দেশীয় রাজনীতিতে তাঁকে কঠিন বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে। দুর্নীতির মামলার আসামি এবং যুদ্ধ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ থাকলেও তিনি চরম ডানপন্থী মন্ত্রিপরিষদের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান এবং গাজাকে পুরোপুরি দখল ও সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনই তাদের লক্ষ্য। অন্যদিকে, ইসরায়েলি জনমতের একটি বড় অংশ এই যুদ্ধ শেষ করার পক্ষে।

তবে সমালোচকেরা বলছেন, নেতানিয়াহু হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন, যাতে দুর্নীতির মামলায় জেল এড়ানো যায় অথবা সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে তদন্ত শুরু না হয়।

বিশ্লেষক অ্যালন পিঙ্কাসের মতে, ট্রাম্প প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুকে এই পরিকল্পনায় সম্মতি দিতে বাধ্য করেছেন। কারণ গোপনে চুক্তি হলে তিনি উল্টো বক্তব্যও দিতে পারতেন। কিন্তু বাস্তবে নেতানিয়াহু আসলে সময়ক্ষেপণ করে পরিকল্পনাটি ধীরে ধীরে ঠান্ডা করে ফেলবেন।

চ্যাথাম হাউসের ইয়োসি মেকেলবার্গ বলছেন, নেতানিয়াহুর একমাত্র লক্ষ্য হলো রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা। যুদ্ধ থেমে গেলে তিনি দ্রুতই একঘরে হয়ে পড়তে পারেন। ফলে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—তিনি সত্যিই শান্তির পথে হাঁটবেন, নাকি আরও এক দফা সংঘাত টিকিয়ে রাখবেন?

দোনেৎস্ক: শান্তি-আলোচনার টেবিলে পুতিন-জেলেনস্কির অন্তিম বাধা, এর গুরুত্ব কতটা

কী হবে, যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ কেড়ে নেওয়া হয়

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

পুতিন-মোদির আসন্ন বৈঠকের মূলে কী আছে

শাহেনশাহ-ই-পাকিস্তান: আসিম মুনিরের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার স্বপ্ন কি তাসের ঘর

যে ইমরান খানকে আমি চিনতাম—শশী থারুরের স্মৃতিকথায় আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার উত্তেজনায় রাশিয়া ও চীন কেন নীরব

দুবাইয়ে তেজস দুর্ঘটনা: সামনে আসছে ভারতের যুদ্ধবিমান কর্মসূচির পুরোনো দুর্বলতা

হাসিনার ভাগ্যে কী আছে

ইমরানকে সরানোর খেসারত: পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর নীরব অভ্যুত্থান, দেশ শাসনের নয়া মডেল