আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ডাক্তার বাবা প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ছেলেকে। তিন বছর বয়সী হেমিংওয়েকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন হাটে-মাঠে-ঘাটে। শেখাতেন মাছধরা। যখন বয়স আট হলো, তখন মার্কিন দেশে যত গাছ আর প্রাণী ছিল, তাদের নাম মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল ছেলেটির। স্কুল ম্যাগাজিনে হেমিংওয়ে কয়েকটি গল্প লিখেছিলেন। এরপর লিখতে শুরু করেছিলেন খেলাধুলা নিয়ে প্রতিবেদন। ব্যঙ্গরচনাও শুরু হলো লেখা। সে সময়েই ঠিক করে ফেলেন লেখক হবেন।
জীবনে কত ঘটনাই না ঘটেছে তাঁর। সৈন্য হতে চেয়েছেন, চোখের দৃষ্টি সৈনিক হওয়ার উপযোগী নয় বলে সেনাবাহিনী তাঁকে নেয়নি। রেডক্রসের গাড়ির চালক হয়ে ঠিকই হাজির হয়েছিলেন যুদ্ধের মাঠে। বিয়ে করেছিলেন চারটি। প্রত্যেক স্ত্রীর নামেই একটি করে বই উৎসর্গ করেছেন। প্রিয় বাবা ক্লারেন্স হেমিংওয়ে, ভাই লিস্টার হেমিংওয়ে, বোন উরসালা হেমিংওয়েও আত্মহত্যা করেছিলেন। বাবা আত্মহত্যা করেছিলেন ডায়াবেটিস আর অর্থাভাব সহ্য করতে না পেরে। বাবার মৃত্যু লেখকের জন্য ছিল বড় আঘাত। এরপর তিনি বহুদিন উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করেন।
ত্রিশের দশকে হেমিংওয়ে একটা বিড়াল উপহার পেয়েছিলেন। জন্ম থেকেই বিড়াল-বাচ্চাটির পায়ে ছিল ছয়টি করে আঙুল। হেমিংওয়ে বিড়ালটাকে ডাকতেন ‘স্নোবল’ নামে।
এরপর আরও অনেকগুলো বিড়ালকে ঘরে আনেন তিনি। একসময় প্রায় ২০টা বিড়াল বাস করত লেখকের ঘরে। ‘স্নোবল’-এর উত্তরপুরুষেরাও ছিল ছয় আঙুলওয়ালা বিড়াল!
একদিন একটি বিড়াল দুর্ঘটনায় পড়ল। খুব যন্ত্রণা হচ্ছিল বিড়ালটার। সেটা সহ্য করতে না পেরে হেমিংওয়ে গুলি করে মেরেছিলেন বিড়ালটিকে। লেখকের জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর ঘটনাগুলোর একটি এটি।
‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ উপন্যাসের নায়ক বৃদ্ধ সান্তিয়াগোকে দিয়ে হেমিংওয়ে বলিয়েছিলেন, ‘মানুষকে ধ্বংস করা যায়, কিন্তু পরাজিত করা যায় না!’ অথচ শিকারের ছলে জঙ্গলে গিয়ে নিজের শরীরেই চালিয়ে দিলেন গুলি!
সূত্র: ক্নিগোআবজোরডটইনফো