ফেসবুক ও টুইটারে বিতর্কিত পোস্ট পর্যবেক্ষণে উইকিপিডিয়াকে অনুসরণ করে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও মডারেটর নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন ডিজিটাল এনসাইক্লোপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস। তাঁর মতে, অনলাইনের অপব্যবহার ও ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য উইকিপিডিয়া হতে পারে অনুকরণীয়।
ফেসবুক ও টুইটারে ভুয়া পোস্টের ছড়াছড়ি নিয়ে অনেক হইচই হয়েছে। বিশেষত রাজনৈতিক পরিসরে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়া নিয়ে হয়েছে বিস্তর সমালোচনা। এই ভুয়া তথ্যের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোও নিয়েছে নানা ব্যবস্থা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটেই জিমি ওয়েলস এ পরামর্শ দেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে।
জিমি ওয়েলস বলেন, ‘একটি অনলাইন ট্রল মোকাবিলায় আমি ব্যক্তিগতভাবে টুইটারের প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসির শরণাপন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু তেমন কোনো সুরাহা হয়নি। তখনই বুঝতে পারি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর সমস্যার মাত্রা কতটা ভয়াবহ। প্রতিনিয়তই কিশোর-কিশোরীরা এই ট্রলের স্বীকার হচ্ছে। এগুলো সমাধানে কোম্পানিগুলো আদতে ব্যর্থ।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, উইকিপিডিয়া ২০০১ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই স্বেচ্ছাসেবক বা মডারেটরদের মাধ্যমে এই ওয়েবসাইটের প্রবন্ধগুলো তত্ত্বাবধান করে আসছে। তাদের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল আছে, যারা স্বাস্থ্য ও ওষুধ-সংক্রান্ত প্রবন্ধগুলো তদারকি করে। এর বিভিন্ন আধেয় বা কনটেন্ট প্রতি ১ দশমিক ৯ সেকেন্ডে সম্পাদিত হয়। উইকিপিডিয়াতে ৫ হাজার অত্যন্ত সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন। আর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সক্রিয় সম্পাদক রয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার। উইকিপিডিয়ায় মাসে প্রায় ২০০ কোটি ভিজিটর আসে।
এদিকে টুইটার জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ব্যবহারকারীদের অপব্যবহার মোকাবিলায় তারা নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তারা ব্যবহারকারীদের অবাঞ্ছিত শব্দ ও ইমোজি ফিল্টার করার ‘নতুন উপায়’ অনুসন্ধান করছে। শিগগিরই তারা পরীক্ষামূলকভাবে একটি ‘হেড আপ’ ফিচার চালু করবে, যা অনলাইনে মানুষের কথোপকথন উত্তাপ ছড়ানো শুরু করলে, তাকে সতর্ক করবে। এ ছাড়া এমন আরেকটি ফিচারেরও পরিকল্পনা আছে, যার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী অন্যজন দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত ট্যাগ করা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারবে।
অন্যদিকে ফেসবুক জানিয়েছে, তারা তাদের বৈশ্বিক নিরাপত্তা দলে ৪০ হাজার লোককে নিয়োগ দিয়েছে, যার মধ্যে কনটেন্ট মডারেটরও রয়েছে।
তবে দুই প্রতিষ্ঠানের কেউই জিমি ওয়েলসের করা মন্তব্যের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।