আজ বিকেলে স্টেডিয়ামে ঢুকেই চোখে পড়ল দুজন অপরিচিত লোকের। হয়তো বলতে পারেন, স্টেডিয়ামের আশপাশে কত অচেনা মানুষ থাকে তাদের নিয়ে আলাদা করে বলার কী আছে। কৌতূহল বেড়ে গেল তখনই যখন দেখা গেল তাঁরা কথা বলছেন বাফুফের মিডিয়া ম্যানেজার সাদমান সাকিবের সঙ্গে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটি থেকে এসেছেন তাঁরা।
বাংলাদেশি ফুটবল সমর্থকদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে লেস্টার সিটি। এ ক্লাবটিতেই যে বেড়ে উঠেছেন হামজা চৌধুরী। যাঁর আগমনে বাংলাদেশ ফুটবলে এসেছে নতুন বাকবদল। সেটা ফ্রেমবন্দী করতে এক ভিডিও প্রোডিউসার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা পাঠিয়েছে লেস্টার সিটি।
জাতীয় দলের অনুশীলনে আজ মাঠেই দেখা গেছে তাঁদের। কথা বলতে গেলে ভিডিও প্রোডিউসার ড্যানিয়েল ট্যাগেট বলেন, ‘আমরা আজ(প্রন্টে কাল) সকালেই এসেছি। সম্প্রতি সে ইংল্যান্ডের জাতীয়তা বদলে বাংলাদেশের হয়ে খেলছে। সেটারই একটা প্রামাণ্যচিত্র বানাচ্ছি। ইংল্যান্ডে গিয়ে আরও ভিডিও বানাব। এরপর এডিটিং আছে তাই প্রকাশ পেতে কয়েক মাস লাগবে।’
হামজার জনপ্রিয়তা বর্তমানে দেশের যেকোনো ক্রীড়াবিদের মধ্য সবচেয়ে বেশি। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই তাঁকে ঘিরে ধরছেন সমর্থকেরা। বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁর পিছু ছুটছে প্রতিনিয়ত। হামজার এমন জনপ্রিয়তা প্রত্যাশা করেননি ট্যাগেট, ‘বাংলাদেশে সে কতটা জনপ্রিয়—এটা দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। হামজা বলেছিল আগে আমাকে। কিন্তু এতটা হবে তা আমি ভাবিনি। ম্যাচের সময় হয়তো আরও বাড়ব। হামজা বলেছে, ম্যাচের সব টিকিট নাকি সোল্ড আউট।’
১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের টিকিট বিক্রি হতে সময় লেগেছ মাত্র ৪ মিনিট। ট্যাগেট তা শুনে কিছুটা অবাক, ‘হ্যাঁ, আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশ কেমন, মানুষ হামজাকে কীভাবে গ্রহণ করছে, সে কতটা বড় সেলিব্রিটি। লেস্টারের ভক্তরা তো এগুলো দেখে না। তাদের সেই অভিজ্ঞতা দেখাতেই আমরা কাজ করছি।’
এর আগে লেস্টার সিটির আব্দুল ফাতাউকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র বানাতে তাঁর দেশ ঘানায় গিয়েছিলেন ট্যাগেট। হামজাকে নিয়ে কেন ভিডিও বানাতে হচ্ছে তাঁদের। সেই উত্তরে তিনি বলেন, ‘হামজা ভক্তদের প্রিয় কারণ সে লেস্টারের লোকাল ছেলে। এখানেই বড় হয়েছে। ভক্তরা তাকে ভালোবাসে, আর তার গল্পটাও আকর্ষণীয়। আমরা তাই এই ডকুমেন্টারি করছি।’
লেস্টার সিটি হামজাকে কীভাবে দেখে সেই গল্পও তুলে ধরলেন ট্যাগেট, ‘লেস্টার সিটি হামজাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে। সে আমাদের সহ অধিনায়ক। আমরা তাকে ভালোবাসি, সম্মান করি। সে বহুদিন ধরে ক্লাবে আছে, লেস্টারের কথা ভাবলে হামজার নাম আসে। সে ক্লাবকে ভালোবাসে, ক্লাবও তাকে ভালোবাসে।’
ভারত ম্যাচ পর্যন্ত ঢাকায় থাকবেন ট্যাগেট। তাঁর নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত দীর্ঘদেহী জে প্যাটম্যান। দেখেই বোঝা যায় ফাইটার হিসেবে সুখ্যাতি থাকার কথা তাঁর। অনুমানটা বেশ ভালোভাবেই মিলেছে। খুব বিনয়ীভাবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ ফিরিয়ে দিলেও আড্ডা মারলেন চুটিয়ে। হামজা লেস্টার সিটিতে গেলে এভাবেই আলাপ হয় তাঁদের।