২০২৩ সালে লিওনেল মেসির সৌদি আরবে খেলতে যাওয়ার খবর ছড়ালেও সেটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। মেসি এখন খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দল ইন্টার মায়ামিতে। সেই ঘটনার আড়াই বছর পর আবারও সৌদি-মেসির সম্পর্ক নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
মেসি-সৌদিকে নিয়ে এবার খবরের শিরোনাম হওয়ার কারণ ভিন্ন কিছু। সৌদির এক ক্লাবে খেলতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। কিন্তু দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মেসি সবুজ সংকেত পাননি বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবের এক শীর্ষ ফুটবল কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা এএফপিকে সৌদি ফুটবলের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘মেসির এজেন্ট এ ব্যাপারে (মেসির সৌদি লিগে খেলা) সৌদি প্রো লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সেটা নাকচ করে দিয়েছেন।’
মেসির সৌদি আরবে খেলতে চাওয়ার কারণ মূলত বিশ্বকাপের আগে নিজের ফিটনেস ধরে রাখা। কারণ, এমএলএসের নিয়মিত মৌসুম শেষ হয় অক্টোবরে। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেটা শুরু হয়। জুন-জুলাইয়ে বিশ্বকাপ শুরুর আগে সৌদি লিগে খেলে ফিটনেস ধরে রাখতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
মাহদ স্পোর্টস একাডেমির প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ হাম্মাদ এক পডকাস্টে বলেন, ‘সবশেষ ক্লাব বিশ্বকাপ চলার সময় ইন্টার মায়ামি যোগাযোগ করেছিল। তারা প্রস্তাব দিয়েছিল মেজর লিগ যেহেতু চার মাস বন্ধ থাকে, সেই সময়ে সৌদি লিগে খেলে মেসি ফিটনেস ধরে রাখতে চান।’
মেসির সৌদি লিগে খেলার প্রস্তাব দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হলেও তাতে কোনো সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন হাম্মাদ। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের প্রস্তাব নিয়ে হাম্মাদ বলেন, ‘মন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছিলেন, অন্য কোনো টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে সৌদি লিগ কাজ করবে না। মেসির প্রস্তাব সৌদি আরব প্রত্যাখ্যান করেছে।’
মেসির মতো এমন প্রস্তাব সৌদি আরবকে আগেও দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন হাম্মাদ। পডকাস্টে মাহদ স্পোর্টস একাডেমির প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। ডেভিড বেকহাম খেলতেন লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সির হয়ে। ২০১০ বিশ্বকাপের আগে এসি মিলানে তিনি গিয়েছিলেন স্বল্প মেয়াদে।’ বেকহাম ২০০৯ সালে এসি মিলানে ধারে গিয়েছিলেন। ইতালির এই ক্লাবে পরের বছর ফের ধারে খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি ফুটবলার। মূলত বিশ্বকাপের আগে ফিটনেস ধরে রাখতেই এমনটা করেছিলেন তিনি।
বার্সেলোনায় প্রায় দুই দশক কাটানোর পর ২০২১ সালে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) খেলতে গিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু দুই বছর কাটানোর পর (২০২৩ সালে) পিএসজির পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছিল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক ডেইলি টাইমস ২০২৩ সালে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী সৌদি আরবের পর্যটন দূত হিসেবে তিন বছরের বেশি চুক্তি করা হয়েছিল। তাতে এই তারকা ফুটবলার ২ কোটি ২৫ লাখ ইউরো পেতে পারতেন বলে জানিয়েছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ২৬৬ কোটি টাকা। তবে সবকিছু ভুল প্রমাণ করে মেসি পাড়ি জমান সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। ইন্টার মায়ামির জার্সিতে ২০২৩ লিগস কাপ ও ২০২৪ সাপোর্টার্স শিল্ডের পুরস্কার জেতেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।