মোস্তাফিজুর রহমান আইএল টি-টোয়েন্টি খেলতে এই মুহূর্তে আছেন আরব আমিরাতে। টুর্নামেন্টে ভালো ছন্দে আছেন। গত পরশু দুবাইয়ে ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে তাঁর অফ কাটার, সিম স্ক্র্যাম্বল নিয়ে ধারাভাষ্যকারেরা ক্ষুরধার বিশ্লেষণ করলেন। সেই বিশ্লেষণ নিয়ে যখন তাঁকে বলা হলো—সব রহস্য তো উন্মোচন হয়ে যাচ্ছে, ব্যাটারদের কি কাবু করা যাবে ‘গোপন’ সব অস্ত্রে?
মোস্তাফিজও কম যান না। রসিকতার সুরে বলেন, ‘এভাবেই তো ১০-১১ বছর চলে গেল, চলুক...।’ সেই ‘চলা’টা অব্যাহত রাখতেই কাল আইপিএল নিলামে রীতিমতো রেকর্ডই গড়ে বসলেন ২ কোটি ভিত্তিমূল্যের ফিজ। তাঁকে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে ভিড়িয়েছে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে। বাংলাদেশি কোনো ক্রিকেটারের আইপিএলে এটাই সর্বোচ্চ দাম। প্রতিক্রিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় ফিজের স্বভাবসুলভ সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘আলহামদুলিল্লাহ।’ পরে কেকেআরের পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় দলটির সমর্থকদের উদ্দেশে মোস্তাফিজ বলেন, ‘কেকেআরের অংশ হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজির দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে ৪ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। কালকের নিলামেও দিল্লি তাঁদের চেনা সৈনিক ফিজকে রেখে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের হাতে তখন বেশি বাজেট ছিল না। এর মধ্যে চেন্নাইও আগ্রহ দেখায় তাদের পুরোনো খেলোয়াড় মোস্তাফিজের দিকে। হাতে যথেষ্ট বাজেট থাকায় দিল্লি-চেন্নাইকে টেক্কা দিয়ে ফিজকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ কোটি টাকা) নিজেদের দলে ভেড়ায় শাহরুখ খানের কলকাতা। ফিজের আগে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে কলকাতায় খেলেছেন মাশরাফি, সাকিব ও লিটন দাস।
আইপিএলের বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ দামের তালিকা করতে বসলে সবার আগে আসে মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম। ২০০৯ আইপিএলের নিলামে মাশরাফিকে কলকাতা নিয়েছিল প্রায় ৪ কোটি টাকায়। মাশরাফির সেই রেকর্ড গত মাসে ভেঙে দিয়েছিলেন ফিজই, দিল্লি যখন তাঁকে আইপিএলের শেষ দিকে দলে নিয়েছিল ৬ কোটি রুপিতে। কলকাতা ফিজকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে নেওয়ায় ফেসবুকে মাশরাফি কাল লিখেছেন, ‘মোস্তাফিজ ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলবে এবার, যা বাংলাদেশ মুদ্রায় ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অভিনন্দন ফিজ। বর্তমান সে যে ছন্দে আছে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। বরং দারুণ কিছু করবে ইনশা আল্লাহ।’
রেকর্ড দামে দল পাওয়ার মধ্যেও মোস্তাফিজের পুরো আইপিএল খেলা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। আইপিএল হওয়ার কথা মার্চের শেষ থেকে পুরো মে মাস। এফটিপি অনুযায়ী, এপ্রিলে আবার ঘরের মাঠে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা বলের সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৭ বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে আগামী বছর প্রতিটি ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্ব বিবেচনায় মোস্তাফিজকে আইপিএল খেলতে বিসিবি এনওসি বা অনাপত্তিপত্র দেবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। অতীতে মোস্তাফিজের এনওসি পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। যদি পুরো আইপিএলে মোস্তাফিজ খেলতে না পারেন সে ক্ষেত্রে পুরো ৯ কোটি ২০ লাখ রুপি তাঁর পাওয়ার কথা নয়। আইপিএলে পারিশ্রমিক মেলে ম্যাচ খেলার অনুপাত অনুযায়ী, যেভাবে তিনি পেয়েছিলেন গত মে মাসে দিল্লির হয়ে।