২৩ বছর টেস্টে পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ২০০০ এর নভেম্বরে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে শুরু হয় ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে বাংলাদেশের পথচলা। প্রথম টেস্ট জয় পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪ বছরেরও বেশি সময়। নিজেদের দ্বিতীয় টেস্ট বাংলাদেশ জিতেছে আরও চার বছর পর।
তবে পথচলার হিসেবে প্রতি বছরে গড়ে একটি করেও ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৩৯ টেস্টে এখন পর্যন্ত ১৯ টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ১০২ টেস্ট ও ড্র করেছে ১৮ টেস্ট। সর্বশেষ টেস্ট জিতেছে আজ সিলেটে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারিয়ে। এর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের সারির দলের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের জয় ৫ ম্যাচে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা-এই চার দলের বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর সবকটিই এসেছে গত ৭ বছরে।
চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টেই ইংল্যান্ডকে হারাতে পারত বাংলাদেশ। জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে ২২ রানে হেরে যায় স্বাগতিকেরা। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিক তার পরের টেস্টে মিরপুরে। ১০৮ রানে ইংল্যান্ডকে হারালেও জয় অত সহজে আসেনি। চতুর্থ ইনিংসে ২৭৩ রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০০ রান করে ফেলেছিল। সেখান থেকে মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ১৬৪ রানে। ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের শততম ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে ২০১৭ এর মার্চে। কলম্বোর পিসারা ওভালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচ বাংলাদেশ রাঙিয়েছে নিজের মতো করে। টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি সাকিব আল হাসান পেয়েছিলেন এই টেস্টে। সেঞ্চুরির পাশাপাশি বোলিংয়ে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। ১৩১ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ইনিংসে ৪৯ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রান করেন তামিম।
শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পাঁচ মাস পর ঘরের মাঠে চমক দেখায় বাংলাদেশ। ২০১৭ এর আগস্টে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মতো টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাটে বলে পুরোদস্তুর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেন সাকিব। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ৮৪ রান ও ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। ২০ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
টেস্ট জয় তো দূরে থাক, নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো জয়ই ছিল না বাংলাদেশ। সেই ডেডলক ভাঙার জন্য বাংলাদেশ বেছে নিল ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণ। ২০২২ এর প্রথম দিনই শুরু হয়েছিল এই টেস্ট। প্রথমে ব্যাটিং করা কিউইরা ৩২৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। এরপর শান্ত, মুমিনুল, লিটন তিন ব্যাটারের দুর্দান্ত ফিফটিতে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ৪৫৮ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড ১৬৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। ১২১ রানে ৭ উইকেট নিয়ে টেস্টে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরী। যার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসেই নিয়েছেন ৬ উইকেট।
চোটে পড়ায় টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। নানা ঘটনাপ্রবাহে নেই তামিম ইকবাল। সঙ্গে নেই লিটন দাস, তাসকিন আহমেদের মতো তারকা ক্রিকেটাররাও। নাজমুল হোসেন শান্তকে করা হয়েছে অধিনায়ক। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড এসেছে একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার নিয়ে। তারকাসমৃদ্ধ কিউই ক্রিকেট দল বাংলাদেশের কাছে হেরেছে ১৫০ রানে। টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত। ১০ উইকেট নিয়ে তাইজুল হয়েছেন ম্যাচসেরা।