কাতারের দোহায় বাংলাদেশ ‘এ’-পাকিস্তান শাহিনস রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ ফাইনালের রূপ বদলেছে ক্ষণে ক্ষণে। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে পাকিস্তান শাহিনস। কিন্তু সেই ম্যাচে সুপার ওভারে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথাবার্তা চলছে এখনো। দেশে ফিরে সাংবাদিকদের সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী।
রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ শেষ করে আকবর আলী, হাবিবুর রহমান সোহান, আবু হায়দার রনি, রিপন মণ্ডলরা মাঝরাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছেন। যদিও তাঁদের মুখে হাসি ছিল না। হাতের নাগালে থাকা রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের ট্রফিটা হাত থেকে ফস্কে যাওয়ার হতাশা তো রয়েছেই। দেশে ফেরার পর অধিনায়ক আকবরকে ঘিরে ধরে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও বুম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে কেন সুপার ওভারে আবদুল গাফফার সাকলাইনকে নামানো হয়েছিল, সেই ব্যাখ্যায় আকবর বলেন, ‘আপনি দুই রকমই বলতে পারেন। সোহানকে আমরা পাঠিয়েছি। সোহান টুর্নামেন্টে আমাদের সেরা ব্যাটার ছিল। সোহানকে সেই জায়গা থেকে পাঠানো হয়েছে। সে সময় মনে হয়েছে যে বিশেষ করে সাকলাইন খুব ভালো টাচে ছিল।’
১২৬ রানের লক্ষ্যে নেমে হাতে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ২ ওভারে বাংলাদেশের ২৭ রান দরকার হয়। সে সময় ২০ রান নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই টেলএন্ডার ব্যাটার আবদুল গাফফার সাকলাইন ও রিপন মণ্ডল। সেই ওভারে সাকলাইন ২ ছক্কা ও রিপন মেরেছেন ১ ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৫ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইনিংস। মূল ম্যাচে ১২ বলে ১৬ রান করা সাকলাইনকে নামানো হয় সুপার ওভারে। কিন্তু সুপার ওভারে নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে আউট হয়ে যান তিনি।
সাকলাইন মূল ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেছিলেন বলেই ফাইনালে তাঁকে সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আকবর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আপনি যদি চিন্তা করেন, আমাদের অনেক অলরাউন্ডার ছিল। পুরো টুর্নামেন্টে সাকলাইন, রাকিবুল, মৃত্যুঞ্জয় বা রনি ভাই ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায়নি। সেই ম্যাচেই লম্বা সময় ধরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল। সাকলাইন যেহেতু ভালো টাচে আছে, সেই চিন্তা করেই তাঁকে পাঠানো হয়েছিল (সুপার ওভারে)। সোহান তো অবশ্যই যেত।’
পাকিস্তানের দেওয়া ১২৬ রানের লক্ষ্যে নেমে প্রথম ১৪ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ ‘এ’। কিন্তু ভাঙনের শুরু এখানেই। বিনা উইকেটে ২২ রান থেকে মুহূর্তেই ৭ উইকেটে ৫৩ রানে পরিণত হয় আকবরের দল। অষ্টম উইকেটে রাকিবুল হাসান ও এস এম মেহেরবের ৩৭ রানের জুটিতে আশা তৈরি হয় বাংলাদেশের। কিন্তু দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ১৭.২ ওভারে ৯৬ রানে ৯ উইকেটে পরিণত হয় তারা। এরপর সুপার ওভারে গেলে বাংলাদেশ তিন বলের মধ্যেই ৬ রানে গুটিয়ে যায়। যার মধ্যে ৫ রান এসেছে ওয়াইড থেকে। ৭ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ২ বল হাতে রেখে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় এই টুর্নামেন্টে।
আশা জাগিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায় বেশ হতাশ আকবর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘অবশ্যই সবাই একটু হতাশ ছিল। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফদের সবাই হতাশ ছিলেন। যেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম, প্রথমত তেমন অবস্থায় যাওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু যেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি, সেখান থেকে আসলে শেষে সুপার ওভারে গিয়ে হেরে যাওয়া, এইটা আসলে সবার জন্যই হতাশাজনক ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চটা দেওয়ার। শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।’