২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচির বেশ কিছু অংশ গত কিছুদিনে বিভিন্ন মাধ্যমে এসে গিয়েছিল। ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে আয়োজিত টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপিং ও পূর্ণাঙ্গ সূচি গতকাল আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছে আইসিসি। বাংলাদেশ পড়েছে ‘সি’ গ্রুপে। যে গ্রুপে আছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বাকি দুই প্রতিপক্ষ সহযোগী দেশ ইতালি ও নেপাল। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের চার ম্যাচের তিনটিই হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও ইতালির বিপক্ষে ভারতের ঐতিহাসিক ভেন্যুটিতে খেলবেন লিটনরা। গ্রুপ পর্বে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ হবে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। ৭ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় প্রতিপক্ষ ইতালি, খেলা শুরু বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটাই বাংলাদেশের খেলা কলকাতায়, শুরু বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ ১৭ ফেব্রুয়ারি নেপালের বিপক্ষে মুম্বাইয়ে। শুরু সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে।
গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের তিনটিই কলকাতায় পড়ে যাওয়ায় বেশ খুশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘কন্ডিশন বিবেচনা করলে আমাদের জন্য ভালো মনে করতে হবে।’ কলকাতা বাংলাদেশের কাছাকাছি কন্ডিশন হলেও চ্যালেঞ্জ আছে। ইডেনে ফাগুনের সকাল কিংবা বিকেলের কন্ডিশন কেমন হয়, সেটি এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফাহিম মনে করেন, দিনের আলোয় ২০ ওভারের ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জটা তাদের নিতে হবে। বলেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখতে হবে। বিপিএলের পর এটার জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা দুপুর ও সন্ধ্যায় খেলতে অভ্যস্ত। কিন্তু সকালের দিকে সেভাবে (টি-টোয়েন্টি) খেলি না। সেটা দেখতে হবে।’
কলকাতায় চেনা কন্ডিশনেই বাংলাদেশ বারবার হোঁচট খায়। এখানে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ ৬ ম্যাচ খেলেছে প্রতিটিই হেরেছে। ২০২৩ বিশ্বকাপে এই মাঠেই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হেরেছিল। আর অতীতে দেখা গেছে, কলকাতায় স্থানীয় দর্শকদের সমর্থনও খুব একটা পায় না বাংলাদেশ। তবে এসব নিয়ে ভাবছেন না ফাহিম। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান বলছেন, ‘দর্শকের সমর্থনের কথা আশায় থাকলে হবে না। আমাদের ভালো খেলতে হবে। আর রেকর্ড যেমনই হোক, কলকাতার উইকেট যেমন হয় আমাদের উইকেটের সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল আছে। কোন ধরনের উইকেটে আমরা অভ্যস্ত—সেটা চিন্তা করলে সারা ভারতবর্ষে কলকাতা সবার আগে আসবে। কলকাতা মাঠে ভাগ্যের ছোঁয়া পাই না পাই, ভেন্যু হিসেবে কলকাতা আমাদের ভালো হওয়ার কথা। আমাদের ভালো খেলতে হবে।’
গ্রুপ থেকে সুপার এইটে উঠতে নিজেদের সবচেয়ে বড় বাধা ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কলকাতায় হারানোর স্বপ্নই দেখেন ফাহিম, ‘খুব কঠিন বলব না। তিনটা ফুল মেম্বার আছে। আমাদের ভালো সুযোগ আছে। চেনা কন্ডিশন তো আছেই, যেভাবে টি-টোয়েন্টি খেলতে শুরু করেছে বাংলাদেশ তাতে আমরা আশা করতেই পারি (সুপার এইটে ওঠার)।’
দূরত্ব বিবেচনায় ২০২৩ বিশ্বকাপে কলকাতায় যেভাবে বাংলাদেশি দর্শকদের ঢল নেমেছিল, এবার কি তা দেখা যাবে? বর্তমান সময়ে ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন বলেই প্রশ্নটা আসছে। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান ফাহিম জানালেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে তাঁরা অনুরোধ করবেন বাংলাদেশের দর্শকদের খেলা দেখার পথটা সহজ করে দেওয়ার, ‘ভিসা পেলে অনেক দর্শক যাবে আশা করি। এটা দারুণ এক উপলক্ষ। এ রকম সুযোগ কম মেলে দেশের বাইরে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে যাওয়া।’
২০ দল নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। চার গ্রুপের প্রতিটি থাকছে পাঁচটি করে দল। প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে সুপার এইটে। সেরা আটে থাকবে দুই গ্রুপ। প্রতিটি গ্রুপে থাকবে চারটি করে দল। দুটি গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল সেমিফাইনালে পা রাখবে। সেখান থেকে ফাইনালে পৌঁছে যাবে দুই দল। ফাইনাল ৮ মার্চ।