ঢাকা: ‘আমি পাইলাম ,আমি ইহাকে পাইলাম’—কাল পাল্লকেলেতে কি এই অনুভূতি হচ্ছিল মুমিনুল হকের?
টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নাকি অন্য সব সেঞ্চুরির চেয়ে আলাদা। মুমিনুল এই স্বাদ পেয়েছেন ১০ বার, যেটি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
তবুও এই সেঞ্চুরি নিয়েই বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস ঠিকই বেরিয়ে আসত তাঁর। দেশের বাইরে একটা সেঞ্চুরি কবে পাবেন! অবশেষে কাল সেটি ধরা দিয়েছে তাঁর কাছে। টেস্টে ৮ বছর কাটিয়ে দেওয়ার পর।
২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজের কথা মুমিনুলের ভোলার কথা নয়। কলম্বোর পিসারা ওভালে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জিতে নিজেদের শততম টেস্টে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মুমিনুলের মনে থাকার কারণ অবশ্য এটি নয়! দলে থাকলেও সেই টেস্টের একাদশে জায়গা পাননি মুমিনুল। দেশের বাইরে গেলে মুমিনুলের ব্যাট রানের কথা বেমালুম ভুলে যায়! ৪২ টেস্ট আর ২৯৬৭ দিন পর দেশের বাইরে কাল প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে মুমিনুলের কি ২০১৭ ফিরে আসছিল মনে?
পরশু প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর উইকেটে এসেছিলেন মুমিনুল। তাঁর অধিনায়কত্বে ৬ টেস্টের ৫টিতেই হেরেছে দল। দেশের বাইরে তাঁর ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তো আছেই। দল দারুণ শুরু পেলেও স্বস্তিতে থাকার সুযোগ ছিল না মুমিনুলের। সব ভাবনা থেকে সরিয়ে স্বচ্ছন্দেই শুরু করেছিলেন।
কাল সকালের ২০-২৫ মিনিট বোলারদের বুঝতে সময় নিয়েছেন। উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু না থাকলেও শুরুর এটুকু সময় দারুণ লাইন-লেংথে বোলিং করেছেন শ্রীলঙ্কান বোলাররা। বাউন্ডারি মেরেই দিনটা শুরু করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর উইকেটের চারপাশে যে শটই খেলছেন, কোনো অস্থিরতা ছিল না। লাহিরু কুমারকে পুল করে মিড অনে পাঠিয়ে দুই রান নিয়ে অনেকদিনের একটা বোঝা নামিয়েছেন। ৭৬ রান থেকে ৮০ রানে পোঁছে পেছনে ফেলেছেন দেশের বাইরে আগের সর্বোচ্চ ৭৭ রানকে। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ইনিংস খেলেছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেমেছিল ১৮১ রানে। ধনাঞ্জয়ার বলে স্লিপে লাহিরু থিরিমান্নের হাতে ধরা পড়ার আগে মুমিনুল থামেন ১২৭ রান করে। মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে দারুণ উচ্ছ্বসিত কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। দিনশেষে ডমিঙ্গো বলছেন, ‘মুমিনুল অসাধারণ ব্যাটসম্যান। এই সেঞ্চুরিটা তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আশা করি মুমিনুল দেশের বাইরেও ধারাবাহিক ভালো করবে।’