ম্যাচ শুরুর আগে ধারাভাষ্যকার এবং শ্রীলঙ্কার সাবেক অলরাউন্ডার ফারভেজ মাহারুফ বলেন, ‘এই পিচে ২২৫–২৩০ রানই জেতার জন্য যথেষ্ট।’ তাঁর এমন কথার বেশ যৌক্তিকতা আছে। বাংলাদেশ–ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজের জন্য গাঢ় কালচে রঙের পিচ বানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) টার্ফ ম্যানেজমেন্ট প্রধান টনি হেমিং।
অতীতে বেশিরভাগ সময়ই মিরপুরে দেখা গেছে কালো রঙের পিচ। তবে এবারের মতো ঘনকালো পিচ সবশেষ কবে চোখে পড়েছে সেটা মনে করা বেশ কঠিন। হেমিংয়ের বানানো পিচে প্রথমবার খেলতে নেমে বেশ সংগ্রামই করতে হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। যেটা স্বাগতিকদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে আরও দীর্ঘ করছে। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
মিরপুরে টস ভাগ্য কথা বলেনি বাংলাদেশের হয়ে। মুদ্রা নিক্ষেপে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু হেমিংয়ের ঘনকালো পিচের আচরণ বুঝতেই যেন কপালের ঘাম ছুটে যাচ্ছে ফিল সিমন্সের শিষ্যদের। নিচু হয়ে আসা বল, অস্বাভাবিক টার্ন আবার কখনও পেসারদের লাফিয়ে উঠা ডেলিভারি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। এর প্রভাব স্কোরবোর্ডে স্পষ্ট।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের পর আফগানিস্তান সিরিজ–সব জায়গাতেই ধারাবাহিক রান করেছেন সাইফ হাসান। কিন্তু মিরপুরের পিচে নামতেই যেন ব্যাটিং ভুলে গেলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। রোমারিও শেফার্ডের করা দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লু হয়ে বিদায় নেন সাইফ। ক্যারিবীয় পেসারের একটু নিচু হয়ে আসা বল ইন সুইং করে তাঁর প্যাডে লাগে। আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার।
পরের ওভারেই ফেরেন সৌম্য সরকার। অফস্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল জোরে খেলার চেষ্টা করেছিলেন এই বাঁ হাতি। কিন্তু পারেননি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রস্টন চেজের হাতে ক্যাচ দেন সৌম্য। দলীয় ৮ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর স্বাগতিকদের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে তাঁরা দুজন মিলে ৭১ রানের জুটি গড়েন ঠিকই–কিন্তু তাঁদের ঘুম পাড়ানিয়া ব্যাটিংয়ে বিরক্ত হয়েছেন ভক্তরা।
২৩ তম ওভারে শান্ত ফিরে গেলে এই জুটি ভাঙে। খারি পিয়েরের বলে এলবিডব্লু হন এই টপঅর্ডার ব্যাটার। রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে ৬৩ বলে ৩২ রান করেন শান্ত। দলীয় ৭৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতি থেকে শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজর সামনে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দাঁড় করাতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।