নির্বাচন যত প্রতিযোগিতামূলক হবে, দেশে-বিদেশে তত গ্রহণযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় জাতিসংঘ। আর আওয়ামী লীগ চায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। নির্বাচন যত প্রতিযোগিতামূলক হবে দেশে-বিদেশে তত গ্রহণযোগ্য হবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চায় নির্বাচনে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দল অংশ নিক। নির্বাচনে আসতে তাদের কেন জোরাজুরি করব? নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের অধিকার, কোনো সুযোগ নয়।’
আজকের আলোচনাটা একটু ভিন্ন ছিল। আলোচনায় বাংলাদেশের উন্নয়ন, এসডিজিতে করণীয়—এসব বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হওয়া ব্যাপক উন্নয়ন অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত।
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে দলীয় সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমরা ৬ জন ছিলাম। আর জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি ছাড়াও আরও দুজন ছিলেন। সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ও আলোচনায় উঠে এসেছে।’
আরেক নেতা বলেন, ‘জাতিসংঘ বাংলাদেশে একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানিয়েছে। বিষয়টিতে আমরাও একমত হয়েছি। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কিনা, না এলে কী হবে সেটাও জানতে চেয়েছে।’
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়। তাঁদের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে বলা হয়, ‘তোমরা যদি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো সাহায্য চাও তাহলে আমরা সেটা করতে পারি।’ একই সঙ্গে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগ্রহের কথাও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে বলা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি বাংলাদেশ পরিপক্ব গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে নির্বাচন নিয়ে আমাদের অনেকগুলো শক্তিশালী আইন রয়েছে। সংবিধানিক ভিত্তি রয়েছে। তাই এখানে নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের দরকার আছে বলে মনে করি না। এটা আমাদের দলের অবস্থান। আর সরকারতো এ ধরনের সহযোগিতা কখনো তাঁদের (জাতিসংঘ) কাছ থেকে চায়নি।’
বৈঠকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা করার জন্য কোনো ধরনের কথা বলা হয়নি বলে দাবি করছেন বৈঠকে উপস্থিত তিনজন নেতা। তাঁদের মধ্যে এক নেতা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে আমরা বলেছি বিএনপি আলোচনায় আগ্রহী না। ২০১৪ সালে সংলাপের জন্য ডাকা হয়েছিল কিন্তু সেটা তাঁরা নাকচ করে দেয়। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দুবার সংলাপ করা হলেও ভোটের দিনদুপুর ১২টায় তাঁরা ভোট বর্জন করে।’