বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ভূতের পিঠে চড়েছে। ভূতের পা যেমন পেছন দিকে যায়, তেমনি নির্বাচন কমিশনও পেছন দিকে হাঁটা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়াম চত্বরে দলটির পঞ্চগড় জেলা কমিটির দ্বাদশ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনে জামানতের টাকা ও খরচের পরিমাণ বাড়ানোর সমালোচনা করে প্রিন্স বলেন, ‘কমিশন এই নির্বাচনকে বড়লোকের টাকার খেলায় পরিণত করার চক্রান্ত করছে। আগে ইলেকশনে জামানত ছিল ২০ হাজার টাকা, এখন করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এর জন্য তো আমরা গণ-অভ্যুত্থান করিনি।’
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের স্বার্থে, শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের স্বার্থে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। বাম এই নেতা বলেন, ‘৫৪ বছরে তো বাংলাদেশকে দেখলেন। ক্ষমতায় কারা ছিল দেখেছেন। ওই একাত্তরের ঘাতক জামাতি ইসলাম ক্ষমতায় ছিল, আওয়ামী লীগ এত দিন ক্ষমতায় ছিল, বিএনপি ছিল, জাতীয় পার্টি ছিল। মানুষের মুক্তি আনতে পেরেছে? পারেনি।’
বাংলাদেশের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষ মাঠে-ময়দানে কাজ করে যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনেছে, তা বিগত ৫৪ বছর ধরে লুটপাট করেছে দুর্বৃত্ত রাজনীতির হোতারা, যার কারণে গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেওয়া যায়নি। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য তারা কর্তৃত্ববাদী, পরিবারতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে বারবার আমরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বিজয় এনেছি। এবারের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীনতা। আজ গণতন্ত্র হুমকির মুখে আর মবের সন্ত্রাস জনজীবনকে দুঃসহ করে তুলেছে। প্রতিদিন মানুষ ঘুম থেকে উঠে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন শুরু করছে।
এ পর্যন্ত অনেক কমিশন গঠিত হয়েছে, কিন্তু তারা বৈষম্য দূর করা নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। তারা গরিব-দুঃখী, মেহনতি মানুষের স্বার্থ নিয়ে ভাবে না, তাই সেগুলো আলোচনাও করে না। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে কমিউনিস্ট পার্টির লাল পতাকাতলে আসার আহ্বান জানান তিনি।