হোম > জাতীয়

মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। এই মামলার আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকেও একই সাজা দেওয়া দেওয়া হয়েছে। একই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেও রাজসাক্ষী হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সাজা নমনীয় করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যার অভিযোগে করা মামলাগুলোর মধ্যে বিচার শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ঘোষিত প্রথম রায় এটি। রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের অংশবিশেষ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। শেষে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার।

প্রধান আসামি শেখ হাসিনা ও দুই সহযোগী

এই মামলার তিন আসামির মধ্যে কেবল পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। প্রধান আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক; তাঁরা ভারতে অবস্থান করছেন।

সাবেক আইজিপি মামুন ট্রাইব্যুনালে নিজের দোষ স্বীকার করে ‘রাজসাক্ষী’ বা ‘অ্যাপ্রুভার’ হয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি ‘প্রাণঘাতী’ অস্ত্র (লেথাল উইপন) ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশ তিনি গত বছরের ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন।

প্রসিকিউশনের বক্তব্য

মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ (প্রসিকিউশন) একাধিকবার দাবি করেছে, শেখ হাসিনা ছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী সব ধরনের অপরাধের মাস্টারমাইন্ড (মূল পরিকল্পনাকারী), হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার (সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা)।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ ও নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয় এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছিল।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত আন্দোলনকারীদের মধ্যে হস্তান্তরের আবেদন জানানো হয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাঁদের খালাস চেয়েছেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ

শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে, যা প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করার দাবি করেছে। অভিযোগগুলো হলো—

অভিযোগ–১: ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া। আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাঁদের অধীনস্ত এবং নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ এবং নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ।

অভিযোগ–২: শেখ হাসিনা কর্তৃক ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে তা কার্যকর করা।

অভিযোগ-৩: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে স্বল্প দূরত্ব থেকে সরাসরি নিরীহ ও নিরস্ত্র আন্দোলনকারী ছাত্র আবু সাঈদকে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়ে হত্যা।

অভিযোগ–৪: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে আন্দোলনরত নিরীহ ও নিরস্ত্র ছয়জনকে গুলি করে হত্যা।

অভিযোগ–৫: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে পাঁচজনের মরদেহ ও একজনকে জীবিত এবং গুরুতর আহত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া।

ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশের’ প্রস্তুতি

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম গতকাল রোববার ব্রিফিংয়ে বলেন, যদি ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে শাস্তি দেন, তবে প্রসিকিউশন তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আরও একটি ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ (দণ্ডাদেশের পরোয়ানা) আবেদন করবে। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) আবেদন করেছিল।

এর আগে ছয় মাসের সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল

আদালত অবমাননার একটি মামলায় গত ২ জুলাই শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। চলতি বছরের এপ্রিলে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—শেখ হাসিনার এমন একটি বক্তব্যের অডিও রেকর্ড অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে। ‘তাঁর এমন বক্তব্য বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা’ উল্লেখ করে আদালত অবমাননার মামলা করেছিল প্রসিকিউশন। সেই মামলায় শেখ হাসিনাকে সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

আজ সংবাদ সম্মেলনে আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব মেনেও মনবদল ইয়াহিয়ার

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

মৎস্য ভবন এলাকায় নতুন এক সেফ হাউসের বর্ণনা দিলেন হাসনাত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

হজযাত্রীদের প্লেনের টিকিটে ৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার

সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুরের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ