প্রতিবেশী দেশ ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করায় চাহিদা মেটাতে রাশিয়ার দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। রাশিয়া থেকে প্রায় ২ লাখ টন গম আমদানি করতে পারে বাংলাদেশ। বুধবার বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার সরাসরি রাশিয়া সরকারের আলোচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারে। রয়টার্সকে এমন সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আগামী রোববার গম কেনার বিষয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে ভার্চুয়াল আলোচনা করা হবে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘লেনদেনসহ সব বিষয়ই ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা করা হবে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা রাশিয়া থেকে অন্তত ২ লাখ টন গম আমদানি করার চেষ্টা করছি।’ তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
এর আগে, গত মে মাসের মাঝামাঝি দেশের বাজারে গমের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয় ভারত। দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষ ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) তখন জানিয়েছিল, যেসব বাণিজ্য চুক্তি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে, কেবল সেগুলোর চালান পাঠানো হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে গম রপ্তানিতে শীর্ষ দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ দুটি যুদ্ধে জড়ালে বিশ্ব বাজারে গমের সরবরাহ অনেকটা কমে যায়। দাম বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রেতারা গম আমদানির জন্য চীন ও ভারতের দিকে ঝোঁকে। কিন্তু ভারতেও গত মার্চে তাপপ্রবাহের কারণে ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ৭.৭৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় চাপের মুখে পড়ে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে দেশের চাহিদা পূরণ এবং প্রতিবেশী ও খাদ্যসংকটের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে গম রপ্তানির স্বার্থে এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রায় ৭০ লাখ টন গম আমদানি করেছিল।