আইনসচিব লিয়াকত আলী মোল্লার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা করিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির’ অভিযোগ তুলেছেন চাঁদাবাজি মামলার আসামি নওরোজ পত্রিকার সম্পাদক শামসুল হক দুররানী। তিনি বলেছেন, লিয়াকত আলী মোল্লা চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা জজ থাকাকালে হেরোইনের বিভিন্ন মামলায় আসামিদের জামিন দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ছেপেছিলেন দুররানী। ফলে বদলি হতে হয় তাঁকে। এর প্রতিক্রিয়ায় লিয়াকত আলী ও উপসচিব (প্রশাসন) গোলজার রহমান তাঁর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ করিয়েছেন।
চাঁদাবাজির ওই মামলায় আজ রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এসব অভিযোগ করেন নওরোজ পত্রিকার সম্পাদক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদালতে আজ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন শামসুল হক দুররানী। তাঁর পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান সম্পাদকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১২ নভেম্বর রাজিবুল ইসলাম নামের এক ঠিকাদার শামসুল হক দুররানীকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জামালপুরের মেলান্দহ থানার উপজেলা বীজ অফিসে রাজিবুল ইসলামের ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৩২ টাকার একটি কাজ চলমান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজের সাইটে অজ্ঞাতনামা কিছু ব্যক্তি কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গত ৭ নভেম্বর রাজিবুল ইসলামকে এক ব্যক্তি ফোন করে সাভার বাসস্ট্যান্ডে দেখা করতে বলেন। জামালপুরে সাইটের কাজে যে ঝামেলা চলছে, তা সমাধান করে দেবেন বলে জানান তিনি। রাজিবুল ইসলাম সেখানে গেলে ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন, জামালপুরের সাইটের কাজ ঠিকঠাকভাবে করতে হলে শামসুল হক দুররানীকে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে।
এ মামলায় আজ জামিনের আবেদন নাকচ হলে আইনসচিব লিয়াকত আলী মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন দুররানী।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বর্তমান আইনসচিব লিয়াকত আলী মোল্লা চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা জজ থাকাকালে হেরোইনের বিভিন্ন মামলা, এমনকি বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারের মামলায় আসামিদের জামিন দেন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে নিউজ করি। এ কারণে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বদলি করা হয়। লিয়াকত আলী ও উপসচিব (প্রশাসন) গোলজার রহমান এজন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ব্যবস্থা করেছেন।’
এ সময় আইনসচিবের দিকে ইঙ্গিত করে নওরোজ সম্পাদক বলেন, ‘বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না? কিছু লেখা যাবে না?’
আইনসচিবই মামলা করিয়েছেন কীভাবে বুঝলে—সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে দুররানী বলেন, ‘এটা পুলিশ আমাকে বলেছে। তাঁর নাম আমি বলব না।’