জ্ঞাত আয় ও বৈধ উপার্জনের তুলনায় বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া ওরফে রিয়া বেগমের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. এম মোশাররফ হোসেন তাঁর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য দেখান। যাচাইকালে আরও ১ কোটি ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮০০ টাকার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে তাঁর অর্জিত ও ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ কোটি ৭১ লাখ ১ হাজার ৪৭৭ টাকা।
অন্যদিকে, তাঁর বৈধ আয় ও ঋণ বা দায়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ পাওয়া যায় ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭৪ টাকা। ফলে তাঁর আয় থেকে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি, যা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছে দুদক।
এদিকে, ড. মোশাররফের স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া ওরফে রিয়া বেগমের সম্পদের ক্ষেত্রে দুদক আরও বড় অস্বচ্ছতা পেয়েছে। তাঁর নামে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার ৭ টাকা। পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯২২ টাকা। সব মিলিয়ে অর্জিত সম্পদ ও ব্যয়সহ মোট হিসাব দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৩ হাজার ৯২৯ টাকা।
কিন্তু তাঁর বৈধ আয়ের উৎস শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৪৯ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫৬ টাকা। ফলে তাঁর আয় থেকে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭৩ টাকার সম্পদের উৎস মেলেনি, যা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে উল্লেখ করেছে দুদক।
দুদক জানায়, ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের তুলনায় অতিরিক্ত ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারাতে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়ার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭৩ টাকার সম্পদ অর্জনে স্বামীর সহযোগিতা পাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আরেকটি মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।