জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস মিশন ইন সাউথ সুদান’ (আনমিস)-এ নিয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ জন নৌসদস্য আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাঁরা দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে রওনা হন। এই কন্টিনজেন্ট সেখানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। এর আগে ৯ ডিসেম্বর প্রথম গ্রুপে ৯৯ জন নৌসদস্য এই মিশনে যোগ দিতে দেশ ছাড়েন।
দক্ষিণ সুদানের প্রতিকূল ও দুর্গম এলাকায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে—নীল নদের নৌপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানি, খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও মানবিক সাহায্য বহনকারী বার্জসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। নৌপথে জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণ ও তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। স্থানীয় জনগণের অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা এবং বেসামরিক নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ উদ্ধার এবং মিশনে নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক সদস্যদের রসদসামগ্রী দুর্গম স্থানে পৌঁছে দেওয়া।
গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। নীল নদের ১ হাজার ৩১১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত ৭১টি লজিস্টিক অপারেশন (অপারেশন লাইফ লাইন) সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন নৌসদস্যরা।
দক্ষিণ সুদান ছাড়াও লেবাননের ভূমধ্যসাগরে উপমহাদেশের একমাত্র মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ নিয়োজিত রয়েছে। নৌবাহিনীর এই গৌরবময় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম উজ্জ্বল করছে।
উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই-তে সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউএন ঘাঁটি আক্রমণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত ও আটজন আহত হন।