হোম > জীবনধারা > ফ্যাশন

প্রিয়তমর হালফ্যাশনে চাদর

সানজিদা সামরিন, ঢাকা 

এখন শুধু পুরুষদের জন্য ফ্যাশন ব্র‍্যান্ডগুলো চাদরের নকশা করছে। ছবিটি সম্পাদনা করা হয়েছে এআই দিয়ে।

চোখ বন্ধ করলেই মনে পড়ে, ছোটবেলায় শীতের দিনে গায়ে জড়ানোর চাদরটি চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে মা হয়তো রান্নাঘরে ঢুকেছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে তৈরি হয়ে জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্টের ওপরই মায়ের ওই চাদর এক প্যাঁচে জড়িয়ে ভাই হুড় হুড় করে চলে গেল সদর দরজা পেরিয়ে। এখানেই কি শেষ?

ছুটির দিনে দাওয়াতে যাওয়ার সময় পাঞ্জাবির ওপর সোয়েটার তো আর চাপানো যায় না। সে সময় পাঞ্জাবির সঙ্গে ম্যাচিং করে পরার জন্য এত রকম হাতকাটা কটিই বা মিলত কোথায়, বলুন! তখন আবারও বাড়ির অন্দরমহলে চোখ। বোনদের অনুনয় করে বলা, ‘তোদের ভালো চাদরগুলো বের কর দেখি! এই পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে পরি।’ বোনেরাও কম যায়? চাইলেই হলো? অত সাধের দামি চাদর কীভাবে না কীভাবে ভাই ব্যবহার করে ফেলে, সে ঝুঁকি নেবে কে! তবুও জোর করে বোনদের আলমারিতে তুলে রাখা চাদর গায়ে চড়িয়েই বেরিয়ে পরা তরুণ কি কম বকুনি খেয়েছেন মা-বোনদের কাছে?

আগে পুরুষের গায়ে জড়ানো চাদর বলতে যা ছিল, তা মূলত বাবা-চাচা-দাদাদের পরার উপযোগী। ফ্যাশনসচেতন তরুণেরা বরাবরই সেসব থেকে দূরে ছিলেন। তাই বলেই তো মা আর বোনদের আলমারিতে তাঁদের নজর—কী করে বাগিয়ে নেওয়া যায় নকশা করা সুন্দর চাদরগুলো। এটাও তো ঠিক বলুন, ওসব চাদরে তাঁদের মানিয়েও যেত বেশ।

কিন্তু ২০২৫ সালে এসে ফ্যাশনসচেতন পুরুষেরা আর মেয়েদের চাদরে নজর দেন না। কারণ তাঁদের জন্য আলাদা করে ফ্যাশন ব্র‍্যান্ডগুলো চাদরের নকশা করছে। ছাপা, রঙিন, রং জ্বলা বা একরঙা উল কিংবা মোটা সুতায় তৈরি এই চাদর ছেলেদের পশ্চিমা ফ্যাশনের স্মার্ট অনুষঙ্গ হিসেবেও দখল করে নিয়েছে অনেকখানি জায়গা। হালকা কি ভারী শীত; ফতুয়া, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি—সবকিছুর সঙ্গেই দিব্যি মানিয়ে যায় হালকা অথবা মোটা চাদরগুলো।

ছাপা, রঙিন, রং জ্বলা বা একরঙা উল কিংবা মোটা সুতায় তৈরি চাদর ছেলেদের ফ্যাশনের স্মার্ট অনুষঙ্গ হিসেবে দখল করেছে অনেকখানি জায়গা। মডেল: তনয়, ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

বিবর্তনের ধারায় ও স্টাইল বদলের দুনিয়ায় চাদর এখন কেবল ঠান্ডা প্রতিরোধক পোশাক হিসেবে আটকে নেই। হয়ে উঠেছে ফ্যাশন অনুষঙ্গ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থেও এসেছে পরিবর্তন। শীতের চলতি ট্রেন্ড হিসেবে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সঙ্গে নানা স্টাইলে চাদর পরছেন হালের তরুণেরা।

ফুল হাতার শার্টের সঙ্গে ভিসকস চাদরের লুপ স্টাইল

যাঁরা ঝামেলায় একেবারেই যেতে চান না, তাঁদের জন্য এই স্টাইল। পাঁচমিশালি রঙের ভিসকস কাপড়ে তৈরি চাদর বেছে নিয়ে গলায় ঝুলিয়ে পরুন। এরপর শেষে দুই মাথায় গিঁট দিয়ে নিন বা পিন মেরে আটকে দিন। এবার তা মালার মতো গলায় পরে টুইস্ট করে আরেক ভাঁজ দিলেই কাজ সারা। এই স্টাইলে চাদর পরলে শীতে আপনার গলা ও কাঁধ থাকবে উষ্ণ।

টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফুলস্লিভ গেঞ্জির সঙ্গে চাদর পরার চল রয়েছে। মডেল: তনয়, ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

উলের চাদর

টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফুলস্লিভ গেঞ্জির সঙ্গে এই চাদর পরার চল রয়েছে। গলায় ঝুলিয়ে বা পুরো শরীরে জড়িয়ে, যেকোনোভাবেই এ চাদর পরা যায়।

উজ্জ্বল দেখাবে পশমিনা শালে

পশমিনা বলতে একধরনের কাশ্মীরি শালকে বোঝায়। ওজনে হালকা ও উজ্জ্বল এই শাল চটজলদি অভিজাত লুক দেবে। পশমিনা সব সময়ই লম্বা, পাশের অংশও বেশ প্রশস্ত। এর দুই পাশের শেষ মাথায় টুইস্টেড টাসেল ঝোলানো থাকে। পশমিনা সাদামাটা শার্ট বা গেঞ্জিকেও অভিজাত লুকে বদলে দেয়।

একরঙা সোয়েটারের সঙ্গে প্রিন্টের চাদর

কালো, ধূসর বা বাদামি কিংবা সাদা একরঙা সোয়েটারের ওপর অ্যানিমেল প্রিন্টের চাদর কিন্তু বেশ মানায়। গলায় দুই প্যাঁচে চাদর জড়িয়ে বাম পাশের প্রান্ত ডান পাশের কাঁধে তুলে দিন। এভাবেই সুন্দর লাগবে।

কোথায় পাবেন এসব চাদর

প্রায় সব ফ্যাশন হাউসই বিভিন্ন ধরনের চাদর বিক্রি করে। অনেক অনলাইন পেজও এগুলো বিক্রি করে। কোনো কোনো পেজ পছন্দমতো চাদর তৈরিও করে দেয়। প্রতিটি জেলা শহরের সুপার মার্কেট বা যেকোনো শপিং মলে খুঁজলে পাওয়া যাবে পছন্দের চাদর। চাদরের ধরনভেদে দাম বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। সাধারণত ৭০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্য়ে ভালো মানের চাদর পাওয়া যায়।

শীতে চাদর স্টাইলিং করবেন যেভাবে

কোরিয়ানরা কেন কালো-সাদা পোশাকে ‘আসক্ত’

এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুকের ফ্যাশন স্মৃতি: ২০০০ থেকে ২০২৫ এ প্রত্যাবর্তন

সাজি ভালোবাসার লাল-সবুজে

বিজয়ের আমেজ যাচ্ছে পাওয়া

শীতেও জনপ্রিয় ক্রপ টপ কো-অর্ডস

আংটিবদলের দিনে যে ধরনের পোশাক পরতে পারেন

উৎসবের এ মাসে লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে যেমন হবে সাজ

দাওয়াতে পরার বাহারি চাদর

এই শীতে সঙ্গী করুন কাশ্মীরি সোয়েটার