হোম > চাকরি > ক্যারিয়ার পরামর্শ

লক্ষ্যভিত্তিক অভ্যাস গড়ার কৌশল

মো. আশিকুর রহমান

লক্ষ্যবিহীন জীবনের পথচলা একরকম দিকহীন জাহাজের মতো, যার শেষ গন্তব্য অনিশ্চিত। বিশেষ করে একজন শিক্ষার্থীর জীবনে লক্ষ্য নির্ধারণ শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি তার জীবনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি করে দেয়। আবার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে বাস্তবতার নিরিখে। লক্ষ্য ছাড়া চেষ্টা চালিয়ে গেলে তা অনেক সময় ফলপ্রসূ হয় না। লক্ষ্য নির্ধারণে ভুল হলে দেখা দিতে পারে হতাশা, ব্যর্থতা এবং আত্মবিশ্বাসের পতন।

কিন্তু কীভাবে একজন শিক্ষার্থী একটি বাস্তবসম্মত লক্ষ্য স্থির করবে? একই সঙ্গে সেটি অর্জনের পথেই-বা কীভাবে তিনি অটল থাকবেন? চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

লক্ষ্য কীভাবে নির্ধারণ করবেন?

  • নিজেকে জানুন
  • নিজের আগ্রহ, দক্ষতা ও দুর্বলতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি। আপনি কোন বিষয়ে পড়তে ভালোবাসেন? কোন কাজ আপনাকে আনন্দ দেয়? কোন ক্ষেত্রে আপনি তুলনামূলক দুর্বল? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাওয়াই লক্ষ্য নির্ধারণের প্রথম ধাপ। নিজের ভেতরের কণ্ঠস্বর শুনে সিদ্ধান্ত নিলে লক্ষ্য স্থির করা সহজ হয়। লক্ষ্য হোক নির্দিষ্ট ও পরিমাপযোগ্য ‘আমি ভালো ছাত্র হতে চাই’ এটি একটি অস্পষ্ট লক্ষ্য। বরং বলা উচিত ‘আমি পরবর্তী পরীক্ষায় গণিতে ৮০%-এর বেশি নম্বর পেতে চাই।’ এতে করে লক্ষ্যটি মাপা যায় এবং বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা তৈরি করা সহজ হয়। এর মাধ্যমে আপনি জানবেন, কী করতে হবে এবং কতটুকু অগ্রগতি হচ্ছে।
  • সময় নির্ধারণ করুন
  • একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ জরুরি। যেমন ‘আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইংরেজিতে ৩০টি নতুন শব্দ শিখব এবং তা ব্যবহার করব।’ সময় নির্ধারণ আপনাকে দায়িত্বশীল করে তোলে এবং লক্ষ্য পূরণের জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়।

লক্ষ্য অর্জনে কীভাবে অটল থাকবেন?

  • লিখে রাখুন ও চোখের সামনে রাখুন
  • আপনার লক্ষ্যগুলো একটি ডায়েরিতে বা নোট বোর্ডে লিখে রাখুন। প্রতিদিন সকালে ও রাতে পড়ুন। এটি আপনার মনকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দেবে, আপনি কোন দিকে এগোচ্ছেন। চাইলে আপনি একটি ভিশন বোর্ডও তৈরি করতে পারেন, যেখানে আপনার স্বপ্ন ও লক্ষ্যগুলোর চিত্র থাকবে।
  • ছোট ছোট ধাপে লক্ষ্য ভাগ করুন
  • বড় লক্ষ্য অর্জন অনেক সময় কঠিন মনে হতে পারে। তাই বড় লক্ষ্যকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করুন। প্রতিটি ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর নিজেকে একটি ছোট পুরস্কার দিন। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং প্রতিদিনের কাজগুলো সহজ মনে হয়।

নিয়মিত অগ্রগতি মূল্যায়ন করুন

  • প্রতি সপ্তাহে একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি কতদূর এগিয়েছি?’ যদি লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে থাকেন, তাহলে কোথায় ভুল হয়েছে তা চিহ্নিত করুন এবং সংশোধন করুন। প্রয়োজনে কাউকে মেন্টর হিসেবে পাশে রাখুন, যিনি আপনাকে গাইড করতে পারবেন।
  • প্রতিদিনের কাজের রুটিন
  • তৈরি করুন
  • নিয়মিত পড়াশোনা, ভালো ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কিছুটা বিরতি; এই অভ্যাসগুলো আপনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা গড়ে তুললে আপনি কম সময়ে বেশি অর্জন করতে পারবেন।
  • ব্যর্থতাকে ভয় না পেয়ে শিখুন
  • সফলতার পথে ব্যর্থতা একটি অঙ্গ। লক্ষ্য অর্জনে সাময়িক পিছিয়ে পড়া মানেই হার মানা নয়। বরং ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার শুরু করা উচিত। ইতিহাসে অনেক সফল মানুষের গল্পেই দেখা যায়, ব্যর্থতাই তাঁদের সফলতার ভিত্তি তৈরি করেছে।

বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জন কোনো এক দিনের কাজ নয়। এটি ধৈর্য, পরিকল্পনা ও নিয়মিত চেষ্টার ফল। একজন শিক্ষার্থীর জীবনে এই অভ্যাস গড়ে উঠলে তিনি শুধু পড়াশোনাতেই নয়, বরং জীবনের সব ক্ষেত্রেই সফল হতে পারবেন। তাই আজ থেকেই বাস্তবভাবে, সচেতনভাবে অটল মনোভাব নিয়ে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সাফল্যের পথে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে চলুন।

পড়াশোনার পাশাপাশি জাপানে চাকরির সুযোগ

যেমন হবে বার কাউন্সিল প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি

ক্যারিয়ারে অগ্রগতির বড় শক্তি নেটওয়ার্কিং

মেডিকেল ভর্তি: প্রস্তুতির সঠিক কৌশল

চাকরিপ্রার্থীদের শেখার আগ্রহ থাকতে হবে

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরুর ৫ ধাপ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও বিসিএস দিলেন?

আইনে পড়ার ভবিষ্যৎ

প্রথমবার টিম লিডার হলে যেভাবে সহকর্মীদের সামলাবেন

বিসিএসের নমুনা ভাইভা: সিভিল সার্ভেন্ট কারা?