প্রযুক্তির প্রেমে পড়েছিলেন তিনি একদমই ছোটবেলায়। কিন্তু কখন যে সেই ভালোবাসা থেকে কনটেন্ট বানানোর যাত্রা শুরু হলো, টেরই পাননি তিনি। আজ যাঁরা বলেন, ‘আমি কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে চাই’, তাঁদের তিনি বলেন, এই যাত্রাটা সহজ নয়, তবে অসম্ভবও নয়। কনটেন্ট নির্মাণ এখন অনেকের কাছেই স্বপ্নের ক্যারিয়ার। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এই পেশায় প্রতিদিনই শেখা, গড়া ও ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে হলে নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করতে হয়, আর কোন কোন ভুল এড়িয়ে চললে পথটা কিছুটা মসৃণ হয়, এই লেখায় তুলে ধরা হয়েছে সে বিষয়গুলো। বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় টেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও Samzone-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যাম-এর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন মো. আশিকুর রহমান।
তোমার কণ্ঠটা তোমারই হোক
প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তোমার কণ্ঠ কোথায়? কনটেন্ট মানে শুধুই ট্রেন্ড ধাওয়া নয়। অনেকেই ভাবে, এই মুহূর্তে ভাইরাল কী, সেটা নিয়েই কিছু বানাতে হবে। কিন্তু আসল সফলতা আসে যখন তুমি নিজের ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে পারো। তোমার কথায় যদি সত্যতা থাকে, তাহলেও মানুষের সঙ্গে কানেকশন গড়ে উঠবে।
আমি যখন প্রথম ভিডিও বানাতাম, তখন প্রতিযোগী ছিল কম, কিন্তু রিসোর্সও ছিল সীমিত। মোবাইলেই এডিটিং, বাসার কোনো এক কোণে আলোছায়া নিয়ে যুদ্ধ—এই ছিল শুরু। কিন্তু আমি জানতাম, আমি যা জানি সেটা যদি সৎভাবে বলি, মানুষ গ্রহণ করবে।
শুরু করার আগে শিখে নাও
প্রযুক্তি বা যেকোনো বিষয় নিয়ে কনটেন্ট বানাতে হলে জানতে হবে সেই বিষয়টা। ইউটিউবে এসে কেবল বললেই হয় না, তথ্য ভুল হলে আস্থা নষ্ট হয়। আমি আজও প্রতিটি ভিডিওর আগে রিসার্চ করি, প্রতিটি ফিচার নিজে ব্যবহার করে দেখি, স্ক্রিপ্ট লিখি, আবার কাটছাঁট করি।
একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর মানে তুমি একজন গাইড, একজন ব্যাখ্যাকারী, কখনো একজন সমালোচক। তাই শেখাটা হতে হবে প্রতিদিনের অভ্যাস।
ধারাবাহিকতা > ভাইরাল
এখানে অনেকেই হতাশ হয়—‘ভিউ আসছে না’, ‘ফলোয়ার বাড়ছে না’। আমি বলি, যদি ধারাবাহিকভাবে ভালো কিছু তৈরি করো, একসময় ঠিকই মানুষ খুঁজে নেবে তোমাকে।
আমার ইউটিউব চ্যানেলের শুরুতে কিছুই ছিল না—না সাবস্ক্রাইবার, না স্পনসর। কিন্তু হাল ছাড়িনি। কারণ আমি জানতাম, সময়কে ধৈর্য দিয়ে পেটাতে হয়, তখনই সে ফল দেয়।
শুধু টেকনিক নয়, টোনও শেখো
অনেকেই ভুলে যায়, কনটেন্ট মানে শুধু ভিডিও নয়—এটি একধরনের কমিউনিকেশন। তুমি কীভাবে কথা বলছ, কীভাবে ভিউয়ারকে অ্যাড্রেস করছ, তাতেও ফারাক পড়ে। নিজের ভোকাল টোন, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, এমনকি থামার জায়গাগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হয়।
নিজের দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলো
টেক কনটেন্ট বানালেই কি সফল হওয়া যায়? না। তুমি যদি আর দশজনের মতো বলো, মানুষ তোমায় আলাদা করে মনে রাখবে না। নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে শেখো—তুমি কীভাবে দেখো বিষয়টাকে, সেটা বলো।
আমি অনেক সময় দেখি, কেউ হুবহু আমার ভিডিওর স্টাইল কপি করেছে। কিন্তু তারা টেকে না। কারণ কপি করে তুমি ভিডিও বানাতে পারো, সম্পর্ক না।