তাহাজ্জুদ মুমিনের মর্যাদার সোপান। রবের প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। ফরজ নামাজের পরই তাহাজ্জুদের স্থান। তাহাজ্জুদের মাধ্যমে পাপ মুছে যায়। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তাহাজ্জুদ প্রাণহীন হৃদয় সজীব করার শ্রেষ্ঠ উপায়। তাহাজ্জুদের বিশেষ পাঁচ পুরস্কার রয়েছে—
এক. জিকরকরীদের দফতরে নাম
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম হতে নিজে ওঠে এবং স্ত্রীকেও জাগায়, অতঃপর তারা একত্রে দুই রাকআত নামাজ (তাহাজ্জুদ) আদায় করে—আল্লাহর নিকট তাদের নাম জিকিরকারী ও জিকিরকারিনীদের দফতরে লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৫১)
দুই. অতীতের গোনাহ মাফ ও ভবিষ্যতের গোনাহ থেকে বাঁচা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা তাহাজ্জুদের প্রতি যত্নবান হও। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সালেহিনের অভ্যাস এবং রবের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। আর তা পাপরাশী মোচনকারী এবং গোনাহ থেকে বাধা প্রদানকারী। (জামে তিরমিজি: ৩৫৪৯)
তিন. নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশের সুসংবাদ
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হে লোক সকল, সালামের প্রসার করো, মানুষকে আহার করাও, আর রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে—তখন তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করো। তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (জামে তিরমিজি: ২৪৮৫)
চার. জাহান্নাম থেকে মুক্তি
তাবরানি শরীফে এসেছে, আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার ফেরেশতাগণ, তোমরা সাক্ষী থেকো—(তাহাজ্জুদ আদায়কারী) জান্নাত আশা করে, আমি তাকে তা দিয়ে দিলাম। আর সে জাহান্নাম ভয় করে, তা থেকে তাকে নিরাপদ করলাম।’ (মুজামুত তাবরানি: ৮৫৩২)
পাঁচ. সর্বাধিক সম্মানের ঘোষণা
কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত লোককে সমবেত করবেন। তখন একজন ঘোষণাকারী সকল সৃষ্টিকে শুনিয়ে ঘোষণা দেবেন, (তোমরা) এক্ষুনি জানতে পারবে কারা অধিক সম্মানিত! (এরপর বলবেন,) যারা রাতের বেলায় (তাহাজ্জুদ আদায়ের জন্য) আরামের বিছানা থেকে নিজেদের পিঠকে দূরে রেখেছিল, তারা দাঁড়িয়ে যাক। নবীজী (সা.) বলেন, তখন তারা দাঁড়াবে, তবে তাঁরা সংখ্যায় কম হবে। এরপর তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুস্তাদরাক হাকেম: ৩৫০৮; বাইহাকী, শুয়াবুল ইমান: ২৯৭৪)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলাম বিষয়ক গবেষক
আরও পড়ুন: