সুদূর ফ্রান্স থেকে বাইসাইকেল চালিয়ে হজ করতে পবিত্র মক্কা নগরীতে পৌঁছেছেন মরক্কো বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক নাবিল এন্নাসরি। এর মধ্যে তাঁকে ৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়েছে!
আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাবিল এন্নাসরি গত ২২ এপ্রিল প্যারিস থেকে যাত্রা শুরু করেন। এরপর ইতালি, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনেগ্রো, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, আলবেনিয়া, গ্রিস, জর্ডান ও তুরস্কসহ মোট ১১টি দেশ পাড়ি দিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করেন তিনি।
এন্নাসরি একজন ফ্রান্সবিষয়ক বিশ্লেষক, লেখক ও সমাজকর্মী। ৪১ বছর বয়সী এন্নাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর যাত্রার বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে জানান, মুসলমানদের প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী হজযাত্রাকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারে এমন দীর্ঘ যাত্রার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এন্নাসরি মদিনার মসজিদে নববীতে পৌঁছার পর একটি আবেগঘন ভিডিও শেয়ার করেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘সাত ঘণ্টার ফ্লাইটে মদিনায় এসে ইবাদত করার অনুভূতি এবং ৫১ দিনের সাইকেল ভ্রমণে মদিনায় এসে ইবাদত করার অনুভূতি মোটেও এক নয়। এ এক ভিন্ন রকম অনুভূতি!’
গত শনিবার এন্নাসরি মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় মুসলমানদের অতীত হজযাত্রার ইতিহাস স্মরণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের হজযাত্রার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও হেঁটে মক্কা–মদিনা ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ প্রাণও হারিয়েছেন। আমি যখন তাঁদের কথা ভাবি, মনের ভেতর শক্তি পাই।’
এন্নাসরি সাইকেলে যাত্রার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সম্পর্কে সচেতন করতেই আমি সাইকেলে যাত্রা করেছি। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খুবই দরকারি বিষয়। আমাদের পৃথিবী আমাদের বাড়ি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদেরই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’
এন্নাসরি আরও বলেন, ‘আমার দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো, প্রাচীনকালে হজযাত্রার সময় মানুষ কেমন অসুবিধার মুখোমুখি হতো, সেটি উপলব্ধি করা।’
এন্নাসরির মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আজ মানুষের সামনে বড় সংকট। তাই পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষা করা এবং মুসলমানদের এর গুরুত্ব বোঝানো জরুরি বলে মনে করেন তিনি। এন্নাসরির আশা, তাঁর এই ভ্রমণ অন্য মুসলমানদেরও পরিবেশবান্ধব ভ্রমণে উৎসাহিত করবে।