আরবি ‘সতর’ শব্দের অর্থ ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা ইত্যাদি। নামাজে কিংবা নামাজের বাইরে শরীরের যে অংশ ঢেকে রাখা ফরজ, সেই অংশকে শরিয়তের পরিভাষায় সতর বলা হয়। পুরুষের সতর হলো নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোনো পুরুষ অন্য পুরুষের সতরের দিকে তাকাবে না। পুরুষের সতর হলো নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত।’ (আবু দাউদ)
শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া কারও সামনে সতরের কোনো অংশ খোলা হারাম। অপারেশন কিংবা রোগ নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে প্রয়োজন পরিমাণে ডাক্তারের সামনে সতর খোলার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারের জন্য শুধু নির্ধারিত জায়গাটি দেখার অনুমতি রয়েছে। জনৈক সাহাবি নবী (সা.)কে সতরের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের লজ্জাস্থান কতটুকু ঢেকে রাখব এবং কতটুকু খোলা রাখব?’ তিনি বললেন, ‘তোমার স্ত্রী ও দাসী ছাড়া সবার দৃষ্টি থেকে তোমার লজ্জাস্থান হেফাজত করবে।’ তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, ‘পুরুষেরা একত্রে অবস্থানরত থাকলে?’ তিনি বললেন, ‘যত দূর সম্ভব কেউ যেন ঢেকে রাখতে হয় এমন স্থান দেখতে না পারে—তুমি তা-ই করো।’ তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, ‘মানুষ তো কখনো নির্জন অবস্থায়ও থাকে।’ তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা তো লজ্জার ক্ষেত্রে বেশি হকদার।’ (তিরমিজি)
পোশাক শালীনতার অনন্য নিদর্শন। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘হে আদমসন্তান, আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, যা তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দূষণীয় তা আবৃত করে এবং যা শোভাস্বরূপ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক, সেটাই সর্বোত্তম। এসব মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলির অন্যতম, যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা আরাফ: ২৬)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক