প্রত্যেক সভ্য জাতির মধ্যে পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাতের সময় ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রকাশার্থে কোনো কোনো বাক্য আদান-প্রদান করার প্রথা প্রচলিত আছে। কিন্তু তুলনা করলে দেখা যাবে যে ইসলামের সালাম যতটুকু ব্যাপক অর্থবোধক, অন্য কোনো জাতির অভিবাদন ততটুকু নয়।
কেননা, এতে শুধু ভালোবাসাই প্রকাশ করা হয় না, বরং সঙ্গে সঙ্গে ভালোবাসার যথার্থ হকও আদায় করা হয়। আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়—আল্লাহ আপনাকে সর্ববিধ বিপদাপদ থেকে নিরাপদে রাখুন। এ অর্থে বাক্যটি শুধু অভিবাদন নয়, বরং ইবাদত।
ইসলামি অভিবাদন সালামে বিরাট অর্থগত ব্যাপ্তি রয়েছে। যথা—
১. এটি আল্লাহর একটি নাম। তা ছাড়া এতে রয়েছে আল্লাহ তাআলার জিকির।
২. মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও সম্প্রীতির প্রকাশ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ইমানদার না হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরকে ভালোবাসবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইমান পূর্ণ হবে না। আমি কি তোমাদের বলে দেব, কীভাবে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে? তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৪)
৩. মুসলিম ভাইয়ের জন্য সর্বোত্তম দোয়া।
৪. সার্বিক নিরাপত্তার অঙ্গীকার। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ, সে প্রকৃত মুসলিম।’ (সহিহ্ বুখারি: ১৫, সহিহ্ মুসলিম: ৪১)
সালাম মুসলমানদের নিজস্ব অভিবাদন। অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তা প্রয়োগ করা যাবে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ইহুদি ও নাসারাদের সালাম দিও না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২১৬৭)
অমুসলিমরা যদি সালাম দেয়, তবে তার উত্তরে শুধু ওয়া আলাইকুম পর্যন্ত বলবে। (সহিহ্ বুখারি: ৬২৫৭; সহিহ্ মুসলিম: ২১৬৪)
লেখক: বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর