কোরবানি মুসলমানদের জন্য অন্যতম বিধান। কেবল সামর্থ্যবানদের জন্যই কোরবানি ওয়াজিব বা আবশ্যক। যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরা কোরবানি করলে সওয়াবের অধিকারী হবেন। তবে কোরবানির পশু কেনার পর যদি তা চুরি হয়ে যায়, হারিয়ে যায় বা মারা যায়, তাহলে করণীয় কী?
ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মতে, কোরবানির জন্য পশুটি যিনি কিনেছিলেন, তিনি যদি সামর্থ্যবান হন, তাহলে তাঁর জন্য আরেকটি পশু কোরবানি করা আবশ্যক। কারণ সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি করা আবশ্যক।
আর যদি সেই ব্যক্তি গরিব হন, কোরবানি তাঁর জন্য আবশ্যক ছিল না, সওয়াবের আশায় কোরবানি দিচ্ছেন, তাহলে তাঁকে আরেকটি পশু কিনে নতুন করে কোরবানি দিতে হবে না।
তামিম ইবনে হুয়াইয়িজ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার কোরবানির পশু জবাই করার আগেই হারিয়ে গেল। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আমি ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বললেন, কোনো অসুবিধা নেই।’
তবে কোরবানির পশু হারিয়ে যাওয়ার পর যদি আরেকটি কেনা হয় এবং আগেরটিও খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে কোরবানিদাতা সামর্থ্যবান হলে যেকোনো একটি পশু কোরবানি করলেই যথেষ্ট হবে। তবে দুটিই কোরবানি করে দেওয়া উত্তম।
আর দরিদ্র হলে দুটিই কোরবানি করে দেওয়া ওয়াজিব। কারণ তাঁর জন্য যেহেতু কোরবানি ওয়াজিব ছিল না, তবু কোরবানির পশু কিনেছেন, তাই সেই পশু কেবল কোরবানিই করতে হবে।
মনে রাখার বিষয় হলো, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব, যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।
নেসাবের পরিমাণ হলো, সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা অথবা এর সমতুল্য সম্পদ।
সূত্র: সুনানে বায়হাকি: ৫ / ২৪৪, বাদায়েউস সানায়ে: ৪ / ১৯৯, বাহরুর রায়েক: ৯ / ৩২০, ফাতহুল কাদির: ৯ / ৫৩০, খুলাসাতুল ফাতাওয়া: ৪ / ৩১৯)