হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

সিয়েরা নেভাদার নিচে খসে পড়ছে ভূত্বক, বিরল প্রমাণ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

সিয়েরা নেভাদার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের একটি অংশ। ছবি: সিএনএন

যুক্তরাষ্ট্রের সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালার নিচে পৃথিবীর ভূত্বক যে ধীরে ধীরে খসে পড়ছে বা খোসা ছাড়াচ্ছে, তার বিরল ও শক্তিশালী প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ৪০ বছরের ভূমিকম্পের রেকর্ড ঘাঁটতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য সামনে আনেন ভূকম্পবিদ ডেবোরাহ কিলব।

সাধারণত উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্পের গভীরতা হয় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং দক্ষিণে এটি ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু ডেবোরাহ আবিষ্কার করেছেন, সিয়েরা নেভাদার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্প হচ্ছে—যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এই গভীরতায় তাপমাত্রা ও চাপ এত বেশি থাকে যে, সাধারণত ভূকম্পন হয় না।

এই অস্বাভাবিক ভূমিকম্পের তথ্য ডেবোরাহ পাঠিয়ে দেন ভেরা শুল্টে-পেলকুমের কাছে, যিনি কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূবিজ্ঞান গবেষক। তিনি ইতিমধ্যেই সিয়েরা নেভাদার গভীর পাথরের গঠন নিয়ে কাজ করছিলেন।

ডেবোরাহর ভূমিকম্পের রেকর্ড এবং শুল্টে-পেলকুমের পাথরের কাঠামো বিশ্লেষণ একত্র করে তাঁরা আবিষ্কার করেন, সেখানে পৃথিবীর ভূত্বক ধীরে ধীরে ভেঙে নিচের স্তরে ঢুকে পড়ছে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন লিথোস্ফেরিক ফাউন্ডারিং।

শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, এই গবেষণা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকদের মতে, এ ঘটনা সিয়েরা নেভাদার মধ্যাঞ্চলে বর্তমানে চলছে এবং ধীরে ধীরে উত্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

লিথোস্ফেরিক ফাউন্ডারিং এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘন পাথরগুলো নিচের তরল-ম্যন্টল স্তরে ঢুকে পড়ে এবং হালকা উপাদান ওপরে উঠে আসে। এর ফলে ভূমির সৃষ্টি হয়। এই প্রসঙ্গে শুল্টে-পেলকুম বলেন, ‘এটি এমন এক ধরনের খোসা ছাড়ানোর মতো ঘটনা, যেখানে ঘন বস্তু নিচে চলে যাচ্ছে এবং হালকা বস্তু ওপরে উঠছে—আমাদের মহাদেশ গঠনের পেছনে এই প্রক্রিয়াই মূল ভূমিকা রেখেছে।’

গভীর ভূ-চিত্র বিশ্লেষণে গবেষকেরা দেখতে পান—৪০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গভীরতায় একটি বিশেষ স্তর রয়েছে, যেখানে পাথরের গঠন দিক পরিবর্তন করছে। এর তুলনা দেওয়া হয়েছে হাতে চেপে ধরা একটি রঙিন কাদার টুকরোর সঙ্গে—চাপ দিলে কাদার দাগগুলো লম্বা দাগে পরিণত হয়, যেমনটা ভূত্বকের নিচে ঘটছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ সিয়েরাতে এই প্রক্রিয়া ৩-৪ মিলিয়ন বছর আগে শেষ হলেও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এটি এখনো চলছে। আর উত্তরে এখনো শুরুই হয়নি। যেহেতু এই অঞ্চলটি ঠান্ডা এবং ভূত্বক অপেক্ষাকৃত পুরু, তাই এখানে এত গভীরে ভূমিকম্প হচ্ছে।

তবে বিজ্ঞানীদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ কেউ মনে করেন, এই প্রক্রিয়ার পেছনে থাকতে পারে সাবডাকশন বা মহাসাগরীয় পাতের নিচে ঢুকে যাওয়া আরেকটি পাত, যা ভূপ্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটায়। জর্জিয়া টেকের গবেষক মিচেল ম্যাকমিলান বলেন, ‘এই গবেষণা সেই বিতর্কে নতুন করে ঘি ঢালবে।’

এই গবেষণা থেকে শুধু ভূমিকম্প নয় বরং পৃথিবীর দীর্ঘমেয়াদি বিবর্তন, মহাদেশ গঠনের ধারা এবং এমনকি ভেনাস গ্রহেও একই প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায় কিনা, তা বোঝার পথ খুলে যেতে পারে।

গভীরতম এই চলমান পরিবর্তন সম্পর্কে শুল্টে-পেলকুম বলেন, ‘আমরা যেভাবে এই গ্রহে বাস করছি, তা সম্ভব হয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক ঘটনার জন্য, যা আমাদের চোখের আড়ালে ঘটে চলেছে। এই বিশাল প্রক্রিয়াগুলো আমাদের অস্তিত্বের মূল ভিত্তি।’

মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ভেনেজুয়েলা ছাড়তে বলল স্টেট ডিপার্টমেন্ট

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আমার মাথায় সমস্যা নেই, বিশ্বাস না হলে এমআরআই রিপোর্ট দেখাব—সাংবাদিকদের ট্রাম্প